| ০৬ জুলাই ২০১৮ | ৬:০৬ অপরাহ্ণ
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘তারেকের টেবিলে বিএনপির ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রতিবেদনটি শুধু হাস্যকরই নয়, এটি সরকারের মিথ্যা প্রপাগান্ডার এক উদ্বেগজনক সংযোজন। আমরা নিশ্চিত যে, বিশেষ সংস্থার নির্দেশেই প্রতিবেদনটি তৈরি ও প্রকাশ করা হয়েছে। সারাদেশের মানুষ যখন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সোচ্চার তখন জনদৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরানোর জন্য আওয়ামী সরকারের নির্দেশে দুরভিসন্ধিমূলকভাবে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে।’
শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার সবদিক থেকে যে মুহূর্তে ব্যর্থতার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে এই বানোয়াট সংবাদটি প্রচার করা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের অর্থনীতি বিশেষভাবে ব্যাংকিং সেক্টরে অভাবনীয় লুটপাট ও বিদেশী ব্যাংকে ক্ষমতাসীনদের বিপুল পরিমাণ গচ্ছিত অর্থের খবর জাতির সামনে উন্মোচিত হওয়া, কোটাবিরোধী দেশের অধিকাংশ শিক্ষিত তরুণদের গণতান্ত্রিক দাবির আন্দোলনে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত গুণ্ডামী হিটলারের গেষ্টাপো বাহিনীকেও লজ্জায় ফেলতো। দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের ক্ষোভের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা এবং সদ্য শেষ হওয়া খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নির্লজ্জ ভোট কারচুপি ও ভোট সন্ত্রাসের চিত্র নিয়ে যখন দেশ-বিদেশ থেকে নিন্দা জানানো হচ্ছে তখন একটি সরকার-ঘনিষ্ঠ পত্রিকার মাধ্যমে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ও মনোনীত প্রার্থীদের একটি মিথ্যা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কারাবন্দি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইস্পাতকঠিন ঐক্য বিভ্রান্ত করা এবং নেতাকর্মীদের মনকে নড়বড়ে করার জন্যই সরকার-সমর্থিত ঐ পত্রিকার দ্বারা হাস্যকর ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদটি পরিবেশন করিয়েছে সরকার।’
পত্রিকারটির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘পত্রিকাটি কোন টেলিস্কোপের মাধ্যমে সূদুর লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের টেবিলে ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকার সন্ধান পেয়েছে? নতুন আবিস্কৃত দুরবীক্ষণ যন্ত্রটির নাম জনসমক্ষে জানালে প্রখ্যাত জ্যেতির্বিজ্ঞানী হাভেল এর নামের সাথে পত্রিকাটির প্রতিবেদকদের নামও মহাবিজ্ঞানী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে এবং বহু আন্তর্জাতিক খ্যাতিও মিলবে।’
‘উক্ত প্রতিবেদনের সংশ্লিষ্টরা শুধু জ্যেতির্বিজ্ঞানীই নন, সিদ্ধ পুরুষও বটে। কারণ তারা মন্ত্রবলে মৃত মানুষকেও জীবিত করতে পারেন। যেমন সদ্য প্রয়াত জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোজাহার আলী প্রধান, কুমিল্লা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মরহুম খোরশেদ আলম, চাঁদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর হায়দার খান, রাজশাহী-৬ আসনে মরহুম আজিজুর রহমান প্রমুখ তাদেরও প্রার্থী তালিকায় রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান প্রতিনিয়তই দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখছেন। তাঁর টেবিলে ৩০০ প্রার্থীর নামের তালিকায় মৃত ব্যক্তিদের নাম আসলো কীভাবে? সুতরাং প্রতিবেদনটি আগাগোড়াই মনগড়া ও কাল্পনিক এবং বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার ও তাদের এজেন্সীগুলোর ধারাবাহিক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের নীলনকশায় আরেকটি সংযোজন।’
সূত্র: ব্রেকিংনিউজ