ডা.এম এ মাজেদ, বিশেষ প্রতিনিধি, আওয়ার কণ্ঠ | ০৫ এপ্রিল ২০১৯ | ৫:৪৩ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব কান্তি বড়ুয়া। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায়ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকে উন্নততর করার জন্য সম্ভাব্য সকল উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আজ শুক্রবার রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে হোমিওপ্যাথিক কল্যাণ সোসাইটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও দিনব্যাপী বিজ্ঞান সেমিনারে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধকের বক্তব্যে এমন প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
দেশে ধ্রুপদীধারা তথা বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে (সিঙ্গেল মেডিসিন) হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নীতি ও অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের সংগঠন হোমিওপ্যাথিক কল্যাণ সোসাইটি আয়োজিত এই সম্মেলনে সারাদেশ থেকে ছয় শতাধিক চিকিৎসক ও চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। যেখানে বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নানা সমস্যা-সংকট ও সাফল্য-সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক উঠে আসে চিকিৎসক নেতা ও অতিথিদের বক্তব্যে। দেশের সকল খাতে উন্নয়নের তুলনায় এখনো পর্যন্ত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সেইভাবে উন্নত হতে পারেনি; এ ক্ষেত্রে সরকারি পদক্ষেপের বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব কান্তি বড়ুয়া বলেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল। এছাড়াও এমন অনেক জটিল ব্যাধি রয়েছে, যার সুচিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে আছে। তবে চিকিৎসকদের যোগ্য ও দায়িত্বশীল হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার হোমিওপ্যাথির উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট আন্তরিক। এই খাতের সমস্যা ও সংকট চিহ্নিত করে বোর্ডের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করলে সরকার নিশ্চয়ই এখাতের উন্নয়ন পরিধি বিস্তৃত করবে। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায় বলেন, হোমিওপ্যাথিক কল্যাণ সোসাইটির এই সম্মেলন সরকারকে একটি বার্তা দিতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে আমার যা করণীয়, তা আমি করব। ডিএইচএমএস কোর্সকে স্নাতক ডিগ্রিতে উন্নীত করার ব্যাপারে সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যানের বক্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়েও বক্তব্য রাখেন বর্তমান চেয়ারম্যান। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক চিঠির মাধ্যমে ডিএইচএমএসকে স্নাতক ডিগ্রি মান দেওয়ার যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেন হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড ফেডারেশন অব হোমিওপ্যাথি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডা. মোঃ মোশাররফ হোসাইন। যিনি সাবেক রাস্ট্রপতি এইচএম এরশাদের ব্যক্তিগত হোমিওচিকিৎসক হিসেবে বঙ্গভবনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আজ সম্মেলনে তিনি পুনরায় ডিএইচএমএসকে স্নাতক মান দেওয়ার সেই দাবি তুলে ধরেন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. ফজলুল হক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক হোসেন, সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. সালেহা খাতুন, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের সদস্য, ডা. আশীষ শংকর নিয়োগী, ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ সোনা মিয়া।
বিজ্ঞান সেমিনারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সুনির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ও আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথ ডা. অপরেশ কুমার ব্যানার্জী, ডা. জি. মওলা, ডা. কাজী সাইফ উদ্দিন আহমেদ, ডা. মো. আবদুল খালেক খান এবং ডা. মোহাম্মদ আশরাফুল হক।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন হোমিওপ্যাথিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি ও সম্মেলনের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ডা. সিরাজুল আলম সিদ্দিকী ফেরদাউস।