• শিরোনাম


    হে যুবক! আত্মহত্যার আগে একটু ভাবো। জিয়াউর রহমান

    | ২৬ অক্টোবর ২০১৮ | ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ

    হে যুবক! আত্মহত্যার আগে একটু ভাবো। জিয়াউর রহমান

    মাস দুয়েক আগের ঘটনা। শাহরিয়ার নামের একটা ছেলে ফেইসবুকে একরকম ঘোষণা দিয়ে আত্মহত্যা করল। তার সর্বশেষ স্ট্যাটাস এবং তার স্কুলের এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছ থেকে জানা গেল যে, সে তার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে অভিমান করেই নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করল।

    একজন পুরুষের কাছে তার জীবনের সবচেয়ে অন্তরঙ্গ পার্টনার হচ্ছে তার স্ত্রী। এই স্ত্রীও কখনও বিপথগামী হয়ে স্বামী-সন্তান রেখে পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এরপর স্বামীর কাছে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে অন্য পুরুষকে বিয়ে (?) করে ফেলে। কত গভীর সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর। সন্তান হওয়ার মাধ্যমে সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়, আরও গভীর হয়। কিন্তু কেউ কী কখনও শুনেছেন যে, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামী ডিভোর্স লেটার পেয়ে আত্মহত্যা করেছে? না, এমনটা তেমন শোনা যায় না।
    অথচ প্রেম-ভালোবাসার অবৈধ সম্পর্ক কত ঠুনকো। কিন্তু এমন সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে একটা পরনারীর কারণে অভিমান করে নিজের আত্মহননের পথ বেছে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের আরও গভীরে যেতে হবে। এমন ঘটনাকে শুধু প্রেমঘটিত বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ কম। যুবকদের এমন কঠিন সিদ্ধান্তে পৌঁছার মৌলিক কারণ উদ্ঘাটন করতে হবে। সে কারণের আলোকে প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে হবে। একজন যুবক বা তরুণী তখনই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, যখন সে মানসিকভাবে চরম বিপর্যয়ে পড়ে। ব্যথার পাহাড় তার বুকের ভেতর চেপে বসে। তারপর জীবনের প্রতি চরম হতাশ হয়ে গলায় দড়ি লাগায়, বুকে ছুরি চালায় কিংবা বিষ পান করে। সে মনে করে এই ভীষণ মানসিক কষ্ট থেকে নিষ্কৃতি পেতে, এই ব্যর্থ জীবন থেকে পালিয়ে বাঁচার একটাই মাধ্যম; আর তা হচ্ছে, আত্মহত্যা।
    আসলে সত্যি কি আত্মহত্যার মাধ্যমে এ যাতনা থেকে বাঁচা সম্ভব? না গ্রীষ্মের উত্তাপ থেকে বাঁচতে গিয়ে অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দেওয়া? বাস্তবতা তো এটাই যে, দুনিয়ার জীবন থেকে চলে যাওয়ার মাধ্যমে আখেরাতের চিরস্থায়ী জীবনের শুরু মাত্র। তাহলে এটা কি কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হলো যে, দুনিয়ার সামান্য ও সাময়িক কষ্ট থেকে বাঁচতে পরকালের অনন্তকালের কষ্টে নিজেকে নিক্ষিপ্ত করা হলো। আত্মহত্যার মাধ্যমে তো সেটাই হচ্ছে।
    কোরআন বলছে, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু।’ (সূরা নিসা : ২৯)।
    হাদিসে এসেছে, কেউ আত্মহত্যা করলে তাকে অনন্তকাল জাহান্নামে জ্বলতে হবে। যার মাঝে দ্বীনের সামান্য জ্ঞান থাকবে, সে কখনও আত্মহত্যা করবে না। কারণ অনন্তকালের জাহান্নামের ভয় তার ভেতর কাজ করবে। যার ভেতর তাকওয়া আছে, আল্লাহর ভয় আছে তার পক্ষে আত্মহত্যার তো প্রশ্নই আসে না। কখনও শোনা যায়নি কোনো আলেম আত্মহত্যা করেছেন। অথচ জীবন-জীবিকার সবচেয়ে কঠিন বাস্তবতায় আলেমরাই বেশি ভুক্তভোগী।
    হে যুবক! তুমি তোমার প্রেয়সীর রূপে এতই মজেছিলে; এর বাইরে আর কিছুই তুমি চিন্তা করতে না। বাস্তবে এই সাময়িক রূপ আর ভালোবাসা তোমার জন্য মরীচিকা ছাড়া কিছুই ছিল না। এই মরীচিকার পেছনে পড়ে তুমি তোমার জীবন ধ্বংস করলে। অথচ তুমি কল্পনাও করনি, চিন্তাও করতে পারনি তোমার আল্লাহ তোমাকে কত ভালোবাসতেন! আল্লাহর ভালোবাসার কাছে দুনিয়ার কোনো ভালোবাসার তুলনাই হয় না। যিনি তোমাকে সর্বাধিক ভালোবাসতেন, তাঁর ভালোবাসাকে পাত্তাই দাওনি। আর যাকে তুমি ভালোবেসেছ, সে তোমার ভালোবাসার কোনোই মূল্য দেয়নি। অপাত্রে ভালোবাসা এমনই হয়ে থাকে।
    ভালোবাসা খুবই খতরনাক এক জিনিস। ভুল জায়গায় নক করলে নির্ঘাত ধ্বংস ডেকে আনে। আসলে তুমি ভুল জায়গায় নক করেছিলে। ফলশ্রুতিতে নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছ। তোমার জন্য করুণা হয়, আফসোস হয়। আজ তুমি অনন্তকালের জীবনের কঠিন বাস্তবতায় চলে গিয়েছ। তোমার অবস্থার ওপর আল্লাহর করুণা ভিক্ষা চাওয়া ছাড়া কিছুই যে করার নেই।



    Facebook Comments Box

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫১৬
    ১৭১৮১৯২০২১২২২৩
    ২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
  • ফেসবুকে আওয়ারকণ্ঠ২৪.কম