| ০৪ অক্টোবর ২০১৮ | ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ
হেফাজতে ইসলামীর আমীর আল্লামা শাহ্ আহমেদ শফী কওমি সনদের স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশের আলেম সমাজের দীর্ঘদিনের দাবী পূরণ হওয়াতে প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধন্যবাদ জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
একজন ভদ্র, সভ্য ও অভিজ্ঞ মানুষ এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করতেই পারেন। তবে আলেম সমাজের সৌজন্য প্রকাশের সরল এই প্রক্রিয়াকে সরকারের তরফ থেকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার অভিলাষ থাকবে। তাদের এই রাজনৈতিক ব্যবহারের কামনা সম্পর্কে আশা করি হেফাজত সতর্ক থাকবে।
হেফাজতে ইসলামী নিজেকে দ্বীন প্রতিষ্ঠা এবং ঈমান ও আকীদা রক্ষার সংগ্রামের জোট বলে পরিচয় দেয়। এটা কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয় বলেই তারা দাবী করে।
২০১৩ সালে এক মাসের ব্যবধানে দু’দু’বার রাজধানী ঢাকা অবরোধ করে রক্তক্ষয়ী প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেদেরকে অপরিহার্য এক বলবান শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। এই বাস্তবতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার বুঝে, তবে সরকারের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তা হৃদয়ঙ্গম করে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে।
এটা চমকপ্রদ অগ্রগতি, যখন দেখি হেফাজতে ইসলাম ও তার আমীর আল্লামা শাহ্ আহমেদ শফী সহ আলেম সমাজকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা, তাদেরকে হেয় করে নানান অসভ্য মন্তব্য করার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশের স্যেকুলার সমাজ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করছে, তাদের মজ্জ্বাগত অভব্য অসদাচরণ সংশোধন করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি আচরণের যে অধোগতি বিস্মিত করে তা হচ্ছে, শাসকদের ছুঁড়ে ফেলা অশোভন আচরণগুলো আজ যেন তাদের রাজনৈতিক বিরোধীরা কুড়িয়ে নিচ্ছে!
এটা খুবই কৌতুকপ্রদ বিষয়, আওয়ামী লীগের সাথে হেফাজতের সাম্প্রতিক মিত্রতায়, আলেম ওলামা বিদ্বেষী নিন্দুক ও সমালোচকদের মূল পক্ষ আজ পুরোপুরি নিশ্চুপ! তাদের কোন টু-শব্দ নাই। বিএনপি কেন সমর্থন যোগায় ‘মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক’ হেফাজতে ইসলামকে গত পাঁচ বছর ধরে প্রশ্ন তুলতে, তুলতে যারা হয়রান হয়ে গিয়েছিল, তারা এখন কোথায়? এই সব মতলববাজদের দলবাজ আচরনের কারণে আজ যে আমোদ উৎপাদন হচ্ছে তা উপভোগ না করে, হেফাজতে ইসলাম ও তাদের আমীরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আহম্মকীর হেতু আমি খুঁজে পাই না।
হেফাজতের সাথে সরকারের বর্তমান সুসম্পর্ক যদি রাজনৈতিক মিত্রতায় পর্যবসিত হয় তাহলেও এর আমীর আল্লামা শাহ্ আহমেদ শফী, কওমি শিক্ষা ব্যবস্থা ও আলেম সমাজ আমাদের কাছে আগের মতই সন্মানিত থাকবেন। বিপরীতে হেফাজতের আমীর এবং আলেম ওলামাগণ যদি স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসন বিরোধী গণতন্ত্রের সংগ্রামে যুক্ত হন, তাহলে কি বাংলাদেশের স্যেকুলার সমাজ তাদের ইসলাম ও আলেম ওলামা বিদ্বেষী চেহারা পুনরায় উন্মোচন করবেন?
ইসলাম বিদ্বেষী স্যেকুলারদের একটা বড় সমালোচনা ছিল, জামায়াত ও বিএনপি মাদ্রাসাগুলোতে টাকা ঢেলে বাংলাদেশকে ‘রাজনৈতিক ইসলাম’-এর প্রভাব বলয়ে ঢুকাতে চায়। আজ আল্লামা শাহ্ আহমেদ শফী দেশবাসীর সামনে হাজির করেছেন একেবারে বিপরীত তথ্য, তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করছেন, অন্য কেউ নয় কওমি মাদ্রাসাগুলোতে মোটা অংকের অর্থায়ন করে আওয়ামী লীগই। আশা করি মাদ্রাসাগুলোতে অর্থায়ন বিষয়টি নিয়ে স্বদেশী স্যেকুলার ও তাদের পৃষ্ঠপোষক ইণ্ডিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলো ভবিষ্যতে প্রশ্ন তুলতে আরো সতর্ক হবেন।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |