নেয়ামত উল্যাহ তারিফ: | ০৫ জুন ২০২২ | ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ
‘যেতে নাহি দিব হায়/ তবু যেতে দিতে হয়/ তবু চলে যায়’- জীবনের এই কঠিন সত্যটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক আগেই লিখেছেন তার “সোনার তরী” কাব্যগ্রন্থে।
মানুষ মায়ার বাঁধন ছিঁড়তে চায় না। প্রিয়জনকে ছেড়ে থাকতে চায় না একটি মুহূর্তও। তবুও মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে বিদায় দিতে হয়। যেমন করে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ লর্ড লিওনার্ড চেশায়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হালিম স্যারকে অবসরজনিত বিদায় দিয়েছে ছাত্র-শিক্ষকগণ।
৪ জুন (শনিবার) সকাল ১০ টায় জ্ঞান তাপস আব্দুল হালিম স্যার এর বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে লর্ড লিওনার্ড চেশায়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ।
উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ কান্তি দেবনাথ এর সভাপতিত্বে প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আইনজীবী কাওছার আলম ভূইয়ার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম (চেয়ারম্যান: সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ) অর্থবহ বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা ও অনুপ্রেরণা মূলক আলোকপাত করেন, অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), আবু জাফর মো. ওমর ফারুক {পিবিআই, চট্টগ্রাম মেট্রো’র পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন)}, ফরহাদ হোসেন বাহার চৌধুরী (ভাইস-চেয়ারম্যান: সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ), ও মিজান বিন মজিদ (অধ্যাপক: ফেনি গার্লস ক্যাডেট কলেজ)।
এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, সালমা চৌধুরী (মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান: সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ), দিদারুল আলম সাহাব উদ্দিন (সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান: ৩নং চরক্লার্ক), আলহাজ্ব মো. আবুল বাশার (ইউপি চেয়ারম্যান: ৩নং চরক্লার্ক), মো. ছানা উল্যাহ বি.কম (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি: সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগ), মো. হানিফ ক্যাশিয়ার (সভাপতি: ৩নং চরক্লার্ক ইউনিয়ন আ.লীগ), আলহাজ্ব বশির আহমেদ (সভাপতি: ৩নং চরক্লার্ক ইউনিয়ন বিএনপি) ও সেকান্দর হোসেন বিটু (মাদ্রাসা শিক্ষক ও বিদায়ী শিক্ষকের পুত্র) প্রমুখ।
আল্লামা ইকবাল বলেন, “প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের একজন মানবাত্মা গঠনকারী মিস্ত্রী হওয়া উচিৎ, এতে করেই সেই শিক্ষক একজন উত্তম শিক্ষকে পরিণত হতে পারেন।” মো. হালিম উল্যাহ স্যার ঠিক তেমনি একজন শিক্ষক ছিলেন। যা উপরোক্ত বক্তাগণ তাদের আলোচনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন।
বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাতেমা মানপত্র পাঠ করেন। তার মানপত্রে শিক্ষাগুরুর মর্যাদা মূর্ত হয়ে ফুটে উঠে।
প্রিয় শিক্ষককে বিদায় দিতে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। তাদের নয়ন ছিলো অশ্রুসিক্ত, হৃদয় ছিলো আবেগ আপ্লুত।
শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনার আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন, জরিপ হোসেন আপন, নুর মোহাম্মদ, নিজাম উদ্দিন নিজাম, শামছুদ্দিন সবুজ, নেছার আহম্মেদ, মো. সাইফুল ইসলাম সহ প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সদস্যবৃন্দ।