লেখক: এম.ডি.সালাহ উদ্দিন। | ০৮ এপ্রিল ২০১৯ | ১২:২৫ অপরাহ্ণ
এই লিখার চতুর্থ পর্বে আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম যে- রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে, স্বেচ্ছাচারীতার কারনে, রাষ্ট্রীয় সরকার গুলো, নিজস্ব স্বকীয়তা এবং শক্তি হারিয়ে, পুতুল সরকারে পরিণত হবার পর, জনবান্ধব বা জনপ্রিয় হতে না পেরে, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, পুঁজিবাদীদের তোয়াজ করতে গিয়ে, শিল্পের নামে তাদেরকে সুবিধা দেবার জন্য, যা কিছু দরকার, সবি তারা করে যাচ্ছেন, পিছনে- অবহেলায় পড়ে আছে, গ্রামীণ অবকাঠামো, কৃষক আর কেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য, দিন দিনই – বঞ্চিত আর সর্বস্বান্ত হচ্ছেন তারা, মিলছেনা তাদের, ব্যয়ের সাথে আয়ের হিসাব, বঞ্চনার বোঝা টানতে টানতে, ভাগ্য বিড়ম্বিত এইসব কৃষক এবং কেটে খাওয়া মানুষেরা, কৃষি জমি থেকে উঠে এসে, ভাগ্যের খুঁজে পাড়ি জমাচ্ছেন শহরের পথে।
শহরে এসে, আবার ঢুকে যাচ্ছেন, ভাড়া বাড়ি নামে, পুঁজিবাদীদের আরেক ফাঁদে, গ্রামে নিজের বাড়ি ফেলে রেখে আসা সেই কৃষক আর কেটে খাওয়া মানুষ গুলো, পুঁজিবাদীদের শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে, প্রাপ্ত বেতনের সিংহভাগই বাড়ি ভাড়া হিসেবে গুনে দিতে হচ্ছে, সেই পুঁজিবাদীর হাতেই, এবং – তারই জাতীয় ভাই অপর একজন কৃষকের হাতে উৎপাদিত শাক সবজি, ফলমূল, যে গুলো কৃষকেদেরকে পাঁচ থেকে দশ টাকায় বিক্রি করতে হয় ( যা সে নিজেও করেছে) সেটাই সে বিশ থেকে ত্রিশ টাকায় কিনে খাচ্ছে, ফলে- এ দিক দিয়েও তার উপার্জিত অর্থ চলে যাচ্ছে, মধ্যস্থতাকারী একজন পুঁজিবাদীর পকেটেই, ফলে – স্থান বদল করে এসেও তারা শুধু শ্রমই দিচ্ছেন, হচ্ছে না তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন।
ভাগ্যের খুঁজে, গ্রাম থেকে ছুটে আসা, ভাগ্য বিড়ম্বিত অন্য আরেক শ্রেণীর মানুষ, নানান ধরনের দোকানপাট নিয়ে বসে পড়েছেন, ঢাকা শহরের অলি গলির ফুটপাত গুলোতে।
মান সম্মত শিক্ষার খুঁজে, ছুটে আসছেন শিক্ষার্থীরাও, প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলো থেকে ঢাকা অভিমুখে আসতে থাকা মানুষের ঢল দেখে মনে হয়, ঢাকা নামের এই শহরই যেন – ভাগ্য গড়ার একমাত্র কেন্দ্র, দেশের বাকি অংশ গুলো যেন- রাষ্ট্রের জন্য অভিশপ্ত ভুমি, দিনে দিনে জন জটলায় নাকাল হতে হতে, আজ প্রায় অকেজোই হতে চলেছে এই ঢাকা শহর।
আমি চেলেঞ্জ নিয়ে বলতে পারি, এ সবি হচ্ছে – রাষ্ট্র গঠনে, অব্যবস্থাপনার ফলাফল।
জন জটলায় আজকের ঢাকা যখন প্রায় অচল, তখনও শাসকগোষ্ঠী সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
কারন- শাসক হিসেবে তাদের নিজস্ব কোন স্বকীয়তা বা শক্তি নেই, ক্ষমতার প্রয়োজনে, পুঁজিবাদীদের তোয়াজ করা ছাড়া আর কিছু করার সামর্থ্য তাদের নেই।
সে কারনেই- অবকাঠামোগত অব্যবস্থাপনার কবলে পড়া, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে বাড়িঘর ফেলে রেখে ভাগ্যের খুঁজে ছুটে আসা, এইসব সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলোর ভীড়ে, ঢাকার যখন আজ নাকাল অবস্থা, তখন – শাসকেরা আবারও এইসব ভাগ্য বিড়ম্বিত মানুষ গুলোর ভাগ্য গড়ার কাজে মনোযোগী না হয়ে, ঐসব পুঁজিবাদীদের সুবিধা করে দেবার জন্য, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে, ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে ফ্লাইওভার নির্মানের কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন, ফলে- ঢাকা যেন দিনে দিনে, আরো বেশি জঞ্জালের নিচেই ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, বিপরীতে – এ গুলোকেই উন্নয়ন বলে চালিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন, পুতুলে পরিণত হওয়া শাসকগোষ্ঠী, পেছনে – বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হিসেবে পরিচিত এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী তো তাদের সাথে আছেই।
আমাদের আলোচনা আর বেশি লম্বা করতে চাইনা, আশাকরি, এই টুকু আলোচনাতেই হয়তো – আমরা, ঢাকা শহর বাসের অযোগ্য হয়ে উঠার মুল কারণ গুলো পরিস্কার ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছি, এবং – আমরা জানি, কোনকিছুর কারন জানা হয়ে গেলে, করনীয় খুঁজে বের করে নেয়া কঠিন কোন ব্যপার নয়, ইচ্ছে থাকলেই, খুঁজে নেয়া যাবে, ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলবার ক্ষেত্রে করনীয় বিষয়, কিন্তু- রাষ্ট্রীয় সরকার যখন নিজস্ব শক্তি হারিয়ে, পুতুল সরকারে পরিণত হয়, তখন- তাদের পক্ষে, কাজটা আর, সহজসাধ্য নয়।
অতএব – রাষ্ট্রের মালিক জনগণ হিসেবে, এই রাষ্ট্রের ভবিষ্যত নিয়ে কি করা উচিৎ?
সেটা কিন্তু- আমাদেরও ভাবার বিষয়!!!
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |