এম.ডি সালাহ উদ্দিন | ০৭ এপ্রিল ২০১৯ | ১২:০৪ অপরাহ্ণ
এই লিখার তৃতীয় পর্বে আমরা এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছি যে- বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রব্যবস্থায় শাসকদের স্বেচ্ছাচারীতার কারনে, কি ভাবে মানুষের মধ্যে, দল,মত, আর সম্প্রদায়ের উত্থান ঘটেছে।
এবং, প্রশ্ন ছিলো যে- বিশ্ব মানবতার সুষ্ঠ সুরক্ষার জন্য, কেমন শাসক চাই?
আমরা বলেছিলাম যে- এই পর্বে – বাংলাদেশ প্রেক্ষিতে, ঢাকাকে বাসযোগ্য করে তোলার ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করবো।
আমরা আগেই, এ বিষয়টি পরিস্কার করেছি যে- শাসকদের স্বেচ্ছাচারীতার কারনেই, বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে উত্থান ঘটেছে, দল, মত আর সাম্প্রদায়িকতা এবং শ্রেণী বৈষম্যের, সংঘটিত হয়েছে, সবল আর দুর্বলের সংঘাত, এবং – সেটা চলছেই।
যে কারনে, বিশ্বজুড়ে শাসকগোষ্ঠী কখনোই জন বান্ধব হতে পারেননি বরং – জনপ্রিয়তা হারিয়ে দূর্বল পুতুল শাসকে পরিণত হয়েছেন তারা, আর সে কারনেই, নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে, জনগণের উপর ভরসা বাদ দিয়ে, পক্ষ নিতে হয়েছে, পুঁজিবাদী বা সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের উপর।
ফলে- বিশ্বজুড়ে বঞ্চিত আর পুঁজিবাদী, সবল আর দূর্বলের সংঘাত কমেনি, বরং বেড়েছে।
বাংলাদেশ এই বাস্তবতার বাইরে নয়, স্বাধীনতার পর থেকে, এ দেশে যাদের হাতেই শাসন ক্ষমতা গিয়েছে, তারা কেউই রাষ্টটি গঠন করার দিকে মনযোগী হয়ে উঠতে পারেন নি, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, তারা হয়েছেন, পুঁজিবাদীদের সেবক বা সংখ্যাগরিষ্ঠদের কর্ণধার, ফলে – সংঘাত আর থামেনি।
এই সংঘাতের কবলে পড়ে, কাউকে মরতে হয়েছে, কাউকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে, কাউকে ক্ষমতা থেকে টেনে হেচড়ে নামানো হয়েছে।
মুলতঃ – ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে, স্বেচ্ছাচারীতা করে, নিজস্ব শক্তি এবং কর্মক্ষমতা হারিয়ে, শাসকেরা নাচের পুতুলে পরিণত হবার কারনেই, বাংলাদেশের রাজধানী, ঢাকা শহর আজ বসবাসের অযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
কারন- শাসকেরা নিজস্ব কর্মক্ষমতা হারানোর ফলে, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, পুঁজিবাদীদের তুষ্টি অর্জন করতে গিয়ে, তাদেরকে দিতে হচ্ছে- লাগাম ছাড়া সুবিধা।
টাকা আছে বলেই, তারা জনে জনে ব্যক্তি মালিকানায় হয়ে উঠেছেন একেকটি গাড়ির মালিক।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ঢাকা শহরের ৭০% রাস্তা ১০% মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে।
সাংবিধানিক কথা হচ্ছে- ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়, আর বাস্তবতা হচ্ছে- পুরোটাই বিপরীত, ১০% মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে আছে ৯০% মানুষ, আর থমকে আছে, এগিয়ে যাবার গতি। ( আমরাও চাই, দেশের প্রতিটি মানুষের একটি করে গাড়ি থাকুক, কিন্তু – সেটা আমাদেরকে সেই অবস্থান বা পরিবেশ পারিপার্শ্বিকতায় পৌঁছাবার পর)
যারা দেশটিকে গঠন করবার কথা ছিলো, তাদের হাতেই, ঘটে চলছে সকল অঘটন।
শাসকগোষ্ঠী, নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে, শিল্পের নামে, পুঁজিবাদীদেরকে বাড়তি সুবিধা দিতে গিয়ে, কি ভাবে ঢাকা আজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠলো, এ সবের বাকি কথা, এবং বাসযোগ্য করে তোলার ইতিকথা জানতে, এই লিখার পঞ্চম পর্বে চোখ রাখুন।
লেখক :কলামিস্ট,ছড়াকার, গল্প লেখক, অভিনয়শিল্পী ও ব্যবসায়ী ।