| ১০ জানুয়ারি ২০১৯ | ৩:৩৩ অপরাহ্ণ
মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সময়ের দাবি। মাদকের নেশায় শিশু ঐশীরা খুনি হয়ে উঠছে। অসুস্থ মস্তিষ্কে বাবা-মাকে পর্যন্ত হত্যা করছে তাদেরই ঔরসজাত সন্তান। মাদকের কারণে অনেক পরিবারে বিরাজ করছে চরম অশান্তি ও অস্থিরতা। মাদকাসক্ত ও মাদককারবারীদের কেউ কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে। আবার তারা জামিনে ছাড়াও পেয়ে যাচ্ছে। সমাজের এই ব্যাধির কোনো নিরাময় হচ্ছে না। রোধ করা যাচ্ছে না দেশব্যাপী মাদকের অবাধ বেচাকেনা।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর দেশের প্রশাসন মাদকের ব্যাপারে নড়েচড়ে ওঠে। পরিচালিত হয় মাদকবিরোধী অভিযান। এই অভিযান এখনো চলমান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে তাদের অনেকেই মারা পড়েছে ও পড়ছে। তারপরও মাদকের ভয়াবহতা কমছে না। সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে দেশ থেকে মাদক নির্মূল করা কঠিন বৈকি। যাদের এ অবৈধ ব্যবসা রোধ করার কথা সেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দলের একশ্রেণির নেতা-কর্মীদের মদদেও মাদক ব্যবসা চলছে বলে জানা যায়। তাই মাদকের করাল আজ গ্রাস প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জকে স্পর্শ করেছে। এমন মাদকাসক্ত সন্তান যখন পরিবারের সদস্যদের জন্য সহিংস হয়ে ওঠে তখন এর চেয়ে ভয়ানক ঘটনা আর কী হতে পারে? সমপ্রতি রাজধানীর ডেমরায় মাদকাসক্ত এক ব্যক্তি দুই শিশুকে নির্যাতনের পর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। কী ভয়াবহ ব্যাপার!
মাদক নির্মূলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের দায়িত্বশীল হতে হবে। সবাইকে মাদক নির্মূলে দিতে হবে সদিচ্ছার প্রমাণ । অন্যদিকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস নির্মূলেও আমাদের মনোযোগ বাড়াতে হবে। থানা পুলিশ, প্রশাসন, কোর্ট-কাচারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বত্র যেভাবে ঘুষ লাগছে তা বলার নয়। সরকারি-বেসরকারি প্রায় প্রতিটি অফিস ও দফতরের ঘুষ-উপরির দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে দুঃসহনীয় নিয়োগবাণিজ্য। আমাদের সমাজের একশ্রেণির মানুষ এজন্য কম দায়ী নয়। তারা বিয়েশাদিতে জামাইয়ের বাড়তি আয়ের খোঁজ-খবর নেয় আগে। কেউ কেউ চাকরি-বাকরির জন্য আগ বাড়িয়ে অর্থ দিয়ে আসে। তাহলে এ দেশ ও সমাজ বদলাবে কিভাবে?
দুর্নীতি রোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ব্যক্তিদের নিয়ে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেছেন। আমরা এখন দেখতে চাই ঘুষ ছাড়াই যেন সকল সেক্টর থেকে যথাযথ সেবা পায় দেশের মানুষ। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হয় ঠিকমত লেখাপড়া। বেকারদের কর্মসংস্থান যেন ত্বরান্বিত হয়। সরকারি হাসপাতালে মেলে সঠিক চিকিত্সা। সর্বোপরি দেশবাসীর সুখ-শান্তির জন্য যেন বন্ধ হয় যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। বন্ধ হয় অগ্নিসন্ত্রাস এমনকি তথ্য সন্ত্রাসও। এমন একটি বাংলাদেশই এখন আমাদের একান্ত কাম্য।
n লেখক : গবেষক