| ০৬ জুলাই ২০১৯ | ৭:২৩ অপরাহ্ণ
চীন কৌশলে জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলমান শিশুদের পরিবার, বিশ্বাস ও ভাষা থেকে বিচ্ছিন্ন করছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে। একই সঙ্গে ওখানকার হাজার হাজার বয়স্ককে বড় বড় বন্দীশিবিরে আটকে রাখা হচ্ছে। আর বাচ্চাদের জন্যে উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা স্কুল তৈরি করা হচ্ছে।
গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে বিবিসি বলছে, এ বিষয়ে ঐ অঞ্চলের বেশ ক-জনের সাক্ষাৎকার, কিছু ডকুমেন্ট এবং পরিস্থিতির শিকার বাচ্চাদের বক্তব্যসহ আরো কিছু প্রমাণ নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। এজন্যে তুরস্কে আশ্রয় নেয়া উইঘুর মুসলমানদের কাছ থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে।
বিবিসি অনুমোদিত গবেষকরা জানান, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ চীন সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এ কারণে ওখান থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য বের করা সম্ভব না। সেখানে বিদেশী সাংবাদিকদের ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখা হয়। শুধু একটি শহরেই চার শতাধিক শিশুর বাবা-মা নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উভয়কেই হয় বন্দীশিবিরে বা কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
গবেষকরা বলেন: আমরা যেসব প্রমাণ পেয়েছি, তা শিশুদের পর্যায়ক্রমে তাদের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে প্রচারণা চালানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। ঐ অঞ্চলের শিশুদের জন্যে চীন সরকারের তরফ থেকে দেয়া ঐসব শিশু সুরক্ষার প্রয়োজন আছে কিনা, তা নির্ধারণ করতে আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা হওয়ার দরকার। পাশাপাশি ওখানকার বয়স্কদের সঙ্গে ঠিক কী করা হচ্ছে, সেটাও দেখা দরকার। জিনজিয়াং থেকে ইস্তাম্বুলে আসা মুসলিমদের ভেতরে শতাধিক মানুষ তাদের জীবনের গল্প বলতে লাইন ধরে দাঁড়িয়েছেন। তাদের হাতে ধরা আছে সন্তানদের ছবি। যারা সবাই জিনজিয়াংয়ের বাড়ী থেকে নিখোঁজ হয়েছে। এ রকম এক মা ছবিতে তার তিন মেয়েকে দেখিয়ে বলেন: আমি জানি না এখন তাদের কে দেখাশোনা করছে। তাদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করতে পারছি না।
ছেলে-মেয়ের ছবি হাতে আরেক মা চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন: ‘আমি শুনেছি, তাদের এতিমখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ নিখোঁজ এসব শিশু সবাই চীনের উইঘুর মুসলমান। তিন বছর আগে চীন সরকার সন্ত্রাস দমনের নামে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ধরে বন্দিশিবিরগুলোতে নিয়ে যেতে শুরু করে।
চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ধর্মীয় চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জন্যে উইঘুর মুসলমানদের নানা শিক্ষা দেয়া হয়। কিন্তু প্রমাণ বলছে, সেখানে শুধু ধর্ম পালন এবং হিজাব পরায় অনেককে ধরে আনা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি।