মাওলানা কাওসার আহমদ যাকারিয়া | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৬:৪২ অপরাহ্ণ
মানুষের অন্তরে পারস্পরিক সম্প্রীতি সৃষ্টি হওয়া মহান আল্লাহ তাআলার দান। তাছাড়া এতে একথাও প্রীয়মাণ হচ্ছে যে, আল্লাহ তাআলার নাফরমানীর মাধ্যমে তাঁর দান অর্জন করা সম্ভব নয়। বরং তাঁর দান লাভের জন্য তার আনুগত্য ও সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা একান্ত শর্ত।
দল বা ব্যক্তিবর্গের মাঝে একতা ও ঐক্যমত এমন একটি বিষয় যার উপকারিতা ও প্রশংসনীয় হওয়ার ব্যাপারে কোন মাযহাব ও ধর্ম, কিংবা কোন মতবাদেই কোন দ্বিমত থাকতে পারে না। সেজন্যই এমন প্রতিটি লোক, যে মানুষের সংশোধন ও সংস্কার কামনা করে সে তাদের পরস্পরের মাঝে ঐক্য সৃষ্টির উপর জোর দিয়ে থাকে। কিন্তু সাধারণ পৃথিবী এ বাস্তবতা সম্পর্কে অবহিত নয় যে, দীর্ঘস্থায়ী ও আন্তরিক ঐক্য বাহ্যিক প্রচেষ্টার দ্বারা অর্জিত হয় না। একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি বিধান ও আনুগত্যের মাধ্যমেই তা অর্জিত হতে পারে। কুরআন মাজীদ এই বাস্তবতার প্রতিই কয়েকটি আয়াতে ইঙ্গিত করেছে। সূরা আল-ইমরানে ইরশাদ হয়েছে,
‘আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর ; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুণ্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।’
(সূরা: আল-ইমরান, আয়াত-১০৩)
আলোচ্য আয়াতে মতবিরোধ ও অনৈক্য থেকে বাঁচার পন্হা নির্দেশ করা হয়েছে যে, সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে অর্থাৎ কুরআন তথা ইসলামী শরীয়তকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর। তাহলে সবাই আপনা থেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাবে এবং পারস্পরিক যেসব বিরোধ রয়েছে, তা মিটে যাবে। অবশ্য মতের পার্থক্য থাকা পৃথক জিনিস, যতক্ষণ পর্যন্ত এ পার্থক্য তার সীমায় থাকে, ততক্ষণ তা বিবাদ-বিসংবাদ ও বিভেদের কারণ হতে পারে না। ঝগড়া-বিবাদ তখনই হয়, যখন শরীয়ত নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘিত হয়। আয়াতের শেষভাগে সাধারণ নীতি আকারে বলা হয়েছে, ‘অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা দৃঢ়চিত্ত লোকদের সাথে রয়েছেন। এতে যুদ্ধক্ষেত্রে দৃঢ়তা অবলম্বনকারীও অন্তর্ভুক্ত এবং শরীয়তের সাধারণ হুকুম-আহকামের অনুবর্তিতায় দৃঢ়তা অবলম্বনকারীরাও শামিল। তাদের সবার জন্যই আল্লাহ তাআলার সঙ্গদানের এ প্রতিশ্রুতি। আর এই খোদায়ী সঙ্গই প্রকৃতপক্ষে তাদের কৃতকার্যতা ও বিজয়ের মূল রহস্য। কারণ, যে ব্যক্তি একক ক্ষমতার অধিকারী পরওয়ারদিগারের সঙ্গলাভে সমর্থক হবে, তাকে সারা বিশ্বের সমবেত শক্তিও নিজের জায়গা থেকে এক বিন্দু নাড়াতে পারে না।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |