লেখক: মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান | ০৪ এপ্রিল ২০১৯ | ১২:১৮ অপরাহ্ণ
আজ ৪ ঠা এপ্রিল দেশের ইসলাম প্রিয় জনতার কাছে অত্যন্ত স্বরণীয় দিন। ২০১১ সালের ৪ ঠা এপ্রিল এ দেশের মুসলিম জনতার ঈমানী চেতনায় বলিয়ান হয়ে রচনা করেছিল দেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অহিংস আন্দোলনের এক অনন্য সূচনা। যে আন্দোলন দেশের ইসলামী শক্তি সমূহকে পরিচয় করেছিল এক অনন্য রুপে।
বাংলাদেশের ইসলাম পন্থীদের নেয়ামক শক্তিতে রুপান্তরিত করতে ২০১১ সালের ৪ ঠা এপ্রিলের হরতাল যার একক ঘোষণায় পালন করেছিল গোটা দেশবাসী তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন বাংলাদেশের মুসলমানদের ঈমান আক্বিদাহ, ইসলামী বিধিবিধান সমুন্নত রাখবার একমাত্র স্বপ্নদ্রষ্টা আল্লামা মুফতী ফজলুল হক আমিনী(রহঃ)।
তার একক ডাকে সাড়া দিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল সকল পেশার প্রতিনিধিবৃন্দ। শহীদ হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে অসংখ্য ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত মুসলিম ভায়েরা।
কোরআন বিরুধী নারী নীতিমালা বাতিলের দাবীতে মুফতী আমিনী (রহঃ) কর্তৃক ঘোষিত হরতাল দেশের নারী জাতিকে তাদের ন্যায্য অধিকার সমুন্নত রাখা সহ ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করে দিয়েছে ।
সতন্ত্র শক্তি হিসেবে আলেম উলামা ও ইসলাম পন্থীদের প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে গেছে মুফতী আমিনী(রহঃ) এর ঘোষিত সে ৪ঠা এপ্রিলের হরতাল।
২০১১সালের ৪ঠা এপ্রিলের হরতালের মাধ্যমে মূলত ইসলাম বিরুধী অপশক্তির মোকাবিলায় ইসলাম পন্থীদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণের এক মহান কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করে গেছেন মুফতী আমিনী(রহঃ) ।
ইসলামী শক্তি সমূহকে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে এক মহা শক্তিতে পরিণত করে গেছেন মুফতী আমিনী(রহঃ)।
৪ঠা এপ্রিল আসলে ই মনের মণিকোঠায় সেই পবিত্র মায়াবী নুরানি অবয়ব ভেসে উঠে।চোখের কিনারা ভেজে যায় কষ্টের পানিতে।
৪ঠা এপ্রিলের হরতাল সংক্রান্ত নানা বিষয়ে সময়ে সময়ে আমার মত এক নগণ্যকে ফোনে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন মুফতী আমিনী(রহঃ)।
আমার যতদূর মনে পরে ৪ঠা এপ্রিলের হরতাল সফলের লক্ষ্যে ব্রাক্ষণবাড়ীয়াতে এক ঐতিহাসিক কাফন মিছিল হয়ে ছিল, যা দেখে হুজুর মোবাইলে বলেছিলেন এনাম! আমি আজ অনেক খুশী হয়েছি, ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার এই মিছিল সারাদেশে প্রভাব পড়বে।
৩রা এপ্রিল রাত প্রায় সাড়ে ১০টায় ফোন করে বলেছিলেন এনাম! আমি চাই তুমি গ্রেফতার হয়ে হলে ও ব্রাক্ষণবাড়ীয়ায় হরতাল টা সফল করবা।
বুযুর্গদের তো কাশফ হয়ে যায়। তাই আগে থেকেই গ্রেফতারের কথা বলে মানসিক ভাবে আমাকে প্রস্তুত করে দিলেন।
৪ঠা এপ্রিল সকালেও ফোন করে দিকনির্দেশনা দিলেন। বিকেলবেলা সত্যিই আমাকে গ্রেফতার করা হল।
গ্রেফতার হয়ে যদি ও প্রায় ৩ মাস যাবত ই অনেক নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে কিন্তু এই গ্রেফতারই আমাকে এক মহা অমূল্য সম্পদ উপহার দিয়েছে। আর তা হল মুফতী আমিনী(রহঃ) এর হৃদয় নিংড়ানো দোয়া। আজ দ্বীনের পথে যতটুকুই আল্লাহ তায়ালা কাজ করার তৌফিক দান করেছে তা হল শুধুমাত্র মুফতী আমিনী(রহঃ) এর নেক দোয়া ও নেক তাওয়াজ্জুহ।
আল্লাহতায়ালা হজরতকে জান্নাতুল ফেরদাউসের আ’লা মাক্বাম দান করুন, আমিন।
পরিশেষে মুফতী আমিনী(রহঃ) এর দারাজাত বুলন্দীর উদ্দেশ্যে সকলের কাছে আজ অন্তত একবার সুরায়ে ফাতিহা,তিনবার সুরায়ে ইখলাস ভিক্ষা চাই।
মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
যুগ্ম সম্পাদক
ইসলামী ঐক্যজোট
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।