লেখক: মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি | ০৯ এপ্রিল ২০২০ | ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ
শবেবরাত বরকতময় মহিমান্বিত রজনী। শবেবরাত শব্দটি ফার্সী শব্দ। শব অর্থ রাত, বরাত অর্থ মুক্তি। শবেবরাত শব্দের অর্থ হলো মুক্তির রজনী। পবিত্র রমজান মাসের পূর্বের মাস শাবান মাসে শবেবরাত হওয়ায় মুসলিম মিল্লাতের নিকট এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। মূলত, আগামী রমজান মাসের প্রস্তুতি নেওয়ার এক বিশেষ প্রশিক্ষণের ভূমিকা হলো শাবান মাস, পবিত্র শবেবরাত।
এই রাত এবাদতবন্দেগীতে অতিবাহিত করার রাত। গোনাহ মাফ করিয়ে নেওয়ার রাত। আল্লাহর দরবারে তাওবাএস্তেগফার ও কান্নাকাটি করার রাত।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করে বলেন, শবেবরাত হলো ‘ লাইলাতুন নিসফ মিন শাবান ‘।অর্থাৎ শাবান মাসের ১৫ তম রজনী।
বিখ্যাত সাহাবী হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণীত হাদিসে প্রিয়নবী হজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহতায়ালা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন। মুশরিক, হিংসুক জাতীয় লোক ছাড়া সকলকেই ক্ষমা করে দেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ)।
করণীয়- পবিত্র শবেবরাতে করণীয় বিষয়ে হজরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণীত হাদিসে প্রিয়নবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) এরশাদ করেন, অর্ধ শাবানের রাত যখন হয় তোমরা রাতটি এবাদত বন্দেগীতে অতিবাহিত কর। এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো। এরাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহতায়ালা প্রথম আকাশে এসে বান্দাহদের ডেকে ডেকে বলতে থাকে, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিজিক অন্বেষণকারী আছো? আমি তাকে রিজিক প্রদান করবো। আছো কোনো রোগাক্রান্ত? আমি তাকে আরোগ্য দান করিবো। এভাবে ফজর পর্যন্ত বান্দাহদের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখকরে ডাকতে থাকেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহতালা অর্ধ শাবানের রাতে যাবতীয় সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত ফায়সালা করেন। আর শবে কদরে তা নির্দিষ্ট দায়িত্বশীলদের অর্পণ করেন।
(তাফসিরে কুরতুবি)।
শবেবরাতের নির্দিষ্ট কোনো নামাজ নেই। তবে সারারাত নফল এবাদত বন্দেগী, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, দোয়া, তাওবাএস্তেগফার, দান সাদকাহ, সহ বিভিন্ন নফল এবাদতবন্দেগীতে অতিবাহিত করা উচিত। দলবদ্ধ ছাড়া মৃত আত্নীয় সজনদের কবর জিয়ারত করা ও যেতে পারে।
এই মহিমান্বিত রজনীতে আমাদের সবার উচিৎ নিজেদের সকল প্রকার গোনাহের কথা স্বরণ করে খাটি অন্তরে আল্লাহর দরবারে তাওবা এস্তেগফার করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এবং ভবিষ্যতে গোনাহ না করার অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া।