| ২৫ নভেম্বর ২০১৮ | ২:৫১ পূর্বাহ্ণ
পর্দার মতো বাস্তবেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায় অনন্ত জলিলকে; এবার তিনজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর হাতে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন এই চিত্রনায়ক।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির উদ্যোগে শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইডেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা পারভীন আক্তার ও রিপা তাবাসসুম এবং সমাজবিজ্ঞান থেকে পাস করা পারুল বেগমের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন অনন্ত জলিল।
এ সময় তিনি বলেন, “মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানুষের কাজ। তাদের দৃষ্টি নেই কিন্তু তারা আমাদের থেকে অনেক ভালো। আল্লাহ তাদের দৃষ্টি দেননি কিন্তু অনেক কিছু দিয়েছেন।”
রাজধানীর সাভারে অবস্থিত এজেআই গ্রুপ অব কোম্পানিজ-এ কাজ করবেন তারা। চাকরির পাশাপাশি সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় তাদের জন্য ফ্ল্যাট ও যাতায়াতের জন্য আলাদা গাড়ির সংস্থানও করেছেন বলে জানান অনন্ত।
“সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা অফিস করবেন। কারণ সকাল ৮টার দিকে ও বিকেল ৫টার পর রাস্তায় প্রচুর জ্যাম হয়,” বলেন এ নায়ক-প্রযোজক।
অনন্ত জলিল বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে ১১০০ লোক কাজ করেন। সেখানে মাত্র তিনজন প্রতিবন্ধী কর্মী একেবারেই কম। সে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে চাকরি দেবেন।
এর বাইরে নির্মাণাধীন দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও বেশ কয়েকজন প্রতিবন্ধীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
নিজেও ‘গরিব পরিবার’ থেকে উঠে এসেছেন জানিয়ে অনন্ত বলেন, “আল্লাহ আমাকে অর্থ দিয়েছেন, যাদের জ্ঞান-বুদ্ধি আছে তাদেরকেও দিতে পারতেন। আমি কখনও মনে করিনি, এটা আমার প্রতিষ্ঠান। আল্লাহ আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেটাই পালন করতে চাই।”
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, চিত্রনায়িকা বর্ষা, শিল্প উদ্যোক্তা সুমন ফারুকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
পেশাগত জীবনে গার্মেন্ট ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত তিনটি এতিমখানা নির্মাণ করেছেন। মিরপুর ১০ নম্বরে বাইতুল আমান হাউজিং ও সাভার মধুমতি মডেল টাউনে আছে এতিমখানাগুলো।
তিনি জানান, প্রায় ২৪০০ এতিম শিশুর দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের ছোট দুই ভাইও আছেন।
এছাড়াও সাভারের হেমায়েতপুরের ধল্লা গ্রামে সাড়ে ২৮ বিঘার উপর একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। তিনি ঢাকার হেমায়েতপুরে অবস্থিত বায়তুস শাহ জামে মসজিদের নির্মাণকাজেও অবদান রাখেন।
ঢাকাই চলচ্চিত্র যখন দর্শক খরায় ভুগছিল তখন অনন্ত জলিল নতুনত্বের চমক আর ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে হলমুখী করেছিলেন দর্শকদের। শাকিব খান ছাড়া যখন ঢালিউড অচল তখন হঠাৎ আবির্ভাব ঘটে অনন্তর। একের পর এক আলোচিত ও সমালোচিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও নির্মাণ করেছেন তিনি।
২০১০ থেকে এ পর্যন্ত ‘মোস্ট ওয়েলকাম’, ‘খোঁজ দ্য সার্চ’, ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের প্রযোজনা এবং সেগুলোতে অভিনয় করেছেন অনন্ত জলিল।
সম্প্রতি ইরান-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘দিন দ্য ডে’ নামে নতুন একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা-প্রযোজনা করছেন।
অনন্ত জলিল পরিচালনার পাশাপাশি এ সিনেমায় অভিনয়ও করবেন। সঙ্গে থাকবেন বর্ষা, সুমন ফারুকসহ আরো অনেকে। এ সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন ছটকু আহমেদ।
মূল ভাষা বাংলা রেখে ফারসি, আরবি ও ইংরেজিতে ডাব করে একই সময়ে বাংলাদেশসহ ইরানের বিভিন্ন সিনেমা হল ও আন্তর্জাতিকভাবে ‘দিন দ্য ডে’ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
Shares