| ০৬ নভেম্বর ২০১৮ | ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ
ফেনীর সোনাগাজিতে ৩০ মেগাওয়াটের একটি বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে ভারতীয় কোম্পানি—উইন্ড এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড। বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে এই প্রথম কোনও উইন্ড মিল স্থাপিত হবে। এর আগে যে দুই জায়গায় ইউন্ড মিল করা হয়েছে। তবে, তার পরিমাণে এক মেগাওয়াটের কম। ভারত তার উপকূলে ২৭ হাজার মেগাওয়াট উইন্ড মিল স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের উপকূলেও অন্তত ১০ হাজার মেগাওয়াট উইন্ডমিল স্থাপনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আলাউদ্দিন বলেন, প্রস্তাবটি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন। প্রস্তাবটি সরকারের ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ক্রয় কমিটির অনুমোদন পাওয়া গেলে তাদের কার্যাদেশ দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রকল্প (আইপিপি)ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ক্রয় চুক্তি সই করবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে পরিকল্পনা দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ৩০ মেটাওয়াটের কেন্দ্রটির জন্য মোট ১৫টি উইন্ড মিল বসানো হবে। প্রতিটি উইন্ড মিল ২ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ১১ দশমিক ১ সেন্ট প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ দেখিয়েছে সিদ্ধান্ত। এই দাম দেশের সৌর ও তেলচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেয়ে কম। তিনি বলেন, ‘আরও ব্যাপকভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হলে বায়ু বিদ্যুতের দাম আরও কমে আসতে পারে।’
এদিকে, আমেরিকার ন্যাশনাল রিনিউয়েবেল এনার্জি ল্যাবরেটরি (এনআরইএল) সম্প্রতি বাংলাদশের উইন্ড ম্যাপিং-এর ফল প্রকাশ করে বলেছে বাংলাদেশে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, সাধারণত ২ দশমিক ৩ থেকে ২ দশমিক ৫ মিটার/ সেকেন্ড হলেই বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম বেশি পড়ে। কিন্তু ৫ থেকে ৬ মিটার/ সেকেন্ড বাতাসের গতিবেগ হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক করা সম্ভব। এখন আধুনিক প্রযুক্তি এসেছে একটি টারবাইন দিয়ে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫ থেকে ৬ মিটার/ সেকেন্ড বাতাসের গতিবেগ রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘ইউরোপীয় দেশগুলো ব্যাপকভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। এরমধ্যে বায়ু, জল ও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকে গুরুত্ব দিচ্ছে উন্নত বিশ্ব। ভবিষ্যতে জীবাশ্ম জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আগেভাগে নবায়যোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতও তাদের দেশে আরও ৩২ হাজার মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প গ্রহণ করেছে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে এক হাজার ২০০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা রয়েছে সেখানে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভবনা থাকলেও কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
তবে, এই ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প সফল হলে বাংলাদেশে অনেকে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনে এগিয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের নিউ অ্যান্ড রিনিউবেল এনার্জি মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে তাদের দেশে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ ২ দশমিক ৪৪ রুপি বা তিন সেন্ট দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২ দশমিক ৫২ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশের দেশের গ্যাস চালিত বিদ্যুতের চেয়ে ভারতে বায়ু বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কম।বায়ু বিদ্যুতে ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের উপকূলে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি বায়ুর প্রবাহ কম থাকলেও বাকি নয় মাস বাতাস থাকে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ |