| ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ | ১০:০০ অপরাহ্ণ
মাকে হারিয়ে দাদীর কোলে আড়াই বছরের শিশু কন্যা মুসলিমা।
মা-বাবার পাশে ঘুমিয়ে ছিলো আড়াই বছরের শিশু কন্যা মুসলিমা। ঠাণ্ডাজনিত অসুখে ভুগছিলেন তার বাবা মাসুদ। এরই মাঝে ঘুমন্ত শিশু ও স্বামীকে রেখে পালানোর সুযোগ খুঁজছিলেন মা শাপলা। রাতের কোনো এক সময়ে বিছানা ছেড়ে উঠে যেতেই টের পেয়ে যায় শিশু মুসলিমা। মা-মা বলে ডাক চিৎকার করতেই ঘুম ভেঙ্গে যায় অসুস্থ বাবার। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছে এমন বিশ্বাসে ‘মা আসছে, আসছে’ বলে শিশুকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন বাবা মাসুদ। কিন্তু সেই চলে যাওয়া মা-আর ফিরে আসেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবেশী এক খালাতো ভাই প্রেমের ফাঁদে ফেলে শাপলা বেগমকে নিয়ে ওই রাতে পাড়ি জমিয়েছে অজানায়। সন্ধান করেও তাদের খোঁজ মেলাতে পারেনি দুই পরিবার। গত ৫ জানুয়ারি রাতে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার তুলশীপুর চকপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে রবিবার মাসুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট শিশুটির দাদী মাবিয়ার কোলে বসে শিশুটি এদিক-ওদিক তাকিয়ে কি যেন দেখে চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এরই মাঝে শোনা গেল শিশুটির কণ্ঠে মা-মা ডাক আর কান্না। মাকে ছাড়া এখন কোনো কিছুই ভালো লাগছে না তার। তবুও মিথ্যা আশ্বাসে মা আসছে বলে শিশুটিকে সান্ত্বনা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করছেন তার দাদীমা। তবে তার চোখেও ছিল অশ্রুর বন্যা। শিশুটির দাদীর সঙ্গে কথা বলার আগেই পাওয়া গেল বাবা মাসুদকে। তার চোখে মুখে বিষন্নতার ছাপ।
মাসুদ জানান, ‘স্ত্রী চলে যাওয়ার চাইতে বেশি মর্মাহত হয়েছেন অবুঝ শিশুকে নিয়ে। তাকে কি করে বোঝাবেন, তার মা তাকে ফেলে রেখে, না বলে রাতের অন্ধকারে মনের মানুষকে নিয়ে সুখ খুঁজতে চলে গেছে!’
তিনি জানান, ‘ঘটনার রাতে শিশুর কান্নায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। প্রকৃতির ডাকে বাইরে গিয়েছে বলে প্রথমত ভেবেছিল। আধা ঘন্টা অপেক্ষার পর তার না ফেরা দেখে বাইরে বের হয়ে খুঁজতে শুরু করি। এমনকি সারা রাত ধরে খোঁজ করেও পাইনি। পরে সন্ধান নিয়ে জানতে পারি তার খালাতো ভাই সেলিমের হাত ধরে পালিয়েছে।’
মাসুদের মা মাবিয়া বেগম জানান, আত্মীয়তার সূত্র ধরে বাড়িতে উঠা-বসা করতো সেলিম। এর মাঝে পরকীয়ায় জড়িয়েছে তা তারা বুঝে উঠতে পারেননি। শাপলা চলে যাওয়ার পর একই গ্রামের আসমত আলীর ছেলে সেলিমকে না পেয়ে তাদের পরকীয়ার বিষয়টি তারা নিশ্চিত হন।
এদিকে সেলিমের বাড়িতে গিয়ে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার মা হালিমা বেগম জানান, শনিবার রাতে খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে। পরে আর বাড়ি ফেরেনি। এক পর্যায় ফোন করেও কোন খোঁজ পাননি বলে জানান হালিমা। অন্যদিকে শাপলাকেও তার বাবার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার পিতা আত্তাব আলী জানান, ওই রাতের পর থেকে তাদের দুইজনের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসীন আলী জানান, মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। তবে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |