লেখক: ম. কাজী এনাম | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৭:২৯ অপরাহ্ণ
একটা সময় আমাদের ছোট সময় ছিল। তখন নির্বাচন বুঝতাম না, বুঝতাম ভোটাভুটি। ভোটযুদ্ধ বুঝতাম না, বুঝতাম হার-জিত। সময়টা বেশি দূরের নয়, এই নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকের। তখন আর বর্তমান নির্বাচন ভাবনা আকাশ-পাতাল তফাত। অনিহা, অনাগ্রহও বেসামাল।
গ্রামে জন্মেছি যেহেতু, সেহেতু ভিলেজ পলিটিক্স চোখে দেখেছি বহুবার। না বুঝলেও নির্বাচন উপলক্ষ্যে ঈদের আমেজ, জনতার স্বাধীন দৌরঝাপ, মিছিল-মিটিং এবং উচ্ছ্বসিত নির্বাচনী প্রচারণা দেখেছি। ভাইভাই হয়ে প্রার্থীদের সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটাও ছিল দেখার মতো।
নির্বাচন ঘীরে গ্রামের সাধারন মানুষ অনেকটাই শহরের সাথে একটা যোগসূত্র প্রতিষ্টিত হত। শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে শহরের মানুষের এক সাথে পথচলা ছিল নির্বাচনের অন্যতম একটি উপায়। এই মেলবন্ধন পৃথিবীর যে কোন নির্বাচন থেকে ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। মেলায় মেলায় নির্বাচন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি, দর্শনার্থী, ব্যবসায়ী শ্রেণি ইত্যাদি ছিল নির্বাচনের আশেপাশের এলাকার শুভাবর্ধক। রঙ্গিন আবরণে, রঙ্গিন নিশানে ও পোষ্টারে ঢাকা পরত সেসব দিনের নির্বাচন কেন্দ্রের এলাকাগুলো।
আমি একটা স্বপ্ন দেখতাম, “একদিন আমিও ভোটার হব। আমার কাছে এসেও প্রার্থীরা ভোট চাইবে!”
ভোটার হলাম ঠিকই, কিন্তু কেউ ভোট চাইনা। ভোটার হলাম ঠিকই, ভোটের ইচ্ছ্বা-আকাঙ্খা, স্বপ্ন এগুলো আর বেচে থাকেনি। এগুলো আজ হারানো অতিথ। আগের ইতিহাস-ঐতিহ্য আজকের দিনের অলিক কল্পকাহিনী ছাড়া যেন বৈ কিছুই নয়! তবুও খুজে বেড়ায়, আশার আলোর ছায়া দেখি… একটা নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ-সুন্দর, মেলবন্ধন নির্বাচনের। যেখানে থাকবেনা কোন অনাকাঙ্খিত, অপ্রত্যাশিত, প্রশ্নবিদ্ধ ভোটাধিকার! আমরা শান্তিকামী, আমরা চাইনা নির্বাচনের জন্য কেউ নির্বাসনে যাক। আমাদের অধিকার, আমাদের দায়িত্ব, আমাদের প্রাপ্য, আমাদের যেন বঞ্চিত না করে…!
#সকাল, ২৭.১২.১৮ঈ: