• শিরোনাম


    নারীদের প্রতি ইসলামের দিকনির্দেশনা

    মাওলানা কাওসার আহমদ যাকারিয়া | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৮:১৩ অপরাহ্ণ

    নারীদের প্রতি ইসলামের দিকনির্দেশনা

     

    আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন, ‘এবং তোমরা তোমাদের গৃহেই অবস্থান করবে, প্রথম জাহেলিয়া যুগের নারীদের ন্যায় নিজেদেরকে প্রদর্শন করোনা। আর নামাজ কায়েম কর, যাকাত আদায় কর, আর আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূলের অনুগত থাক। আল্লাহ তাআলা তো শুধু তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে পবিত্র করতে চান।
    (সূরা: আহযাব, আয়াত: ৩৩)



    অর্থাৎ নিজেদের হেফাজতের উত্তম পন্হা হলো মেয়েদের স্বগৃহেই অবস্থান করা। নিতান্ত প্রয়োজন ব্যতিরেকে ঘর থেকে বের না হওয়া। যদি একান্ত প্রয়োজন হয়, তবে শরীয়ত মুতাবেক পর্দা করে বের হওয়া। ইসলাম নারী জাতিকে দিয়েছে সর্বোচ্চ মর্যাদা। আর এ মর্যাদা রক্ষায় এবং নারী জাতির পবিত্রতা অক্ষুন্ন রাখতে যা একান্ত জরুরী তারই নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম।
    বলা বাহুল্য, বর্তমান যুগে তথাকথিত নারী স্বাধীনতার নামে যে নগ্ন সভ্যতার প্রচলন হয়েছে তা নতুন কিছু নয়, বরং বর্বরতার যুগেও এভাবেই নারীরা নিজেদের সাজ সজ্জা শোভা সৌন্দর্য দেখিয়ে ফিরত। ইসলামের আবির্ভাবের মাধ্যমে এ অন্যায় অনাচার বন্ধ হয়েছিল। কেননা ইসলাম মাতৃজাতির সম্মান রক্ষা করতে চায়। মানবতার কল্যাণ এবং সভ্যতার বিকাশ করতে চাই। এজন্যেই ইসলাম নির্লজ্জতা এবং বেলেল্লাপনার অনুমতি দেয় না। নারী জাতির স্বেচ্ছাচারিতা এবং তার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি অশ্লীলতা ইসলাম বরদাশত করে না। এটি নিঃসন্দেহে আত্মহনন ব্যতীত আর কিছুই নয়। নারী অন্দরমহলের শোভা সৌন্দর্য রুপেই তার প্রতি অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুক এটিই ইসলামের একান্ত কাম্য। কোন কোন অপরিনামদর্শী লোক একথা বলতে শোনা যায় যে, নারীসমাজ জাতির অর্ধেক। যদি নারীসমাজকে পুরুষের পাশাপাশি কাজ করতে না দেওয়া হয় তবে জাতির অর্ধাংশকে অকার্যকর করে রাখা হয়। আর জাতির উন্নতির পথে এটি হয় বড় বাঁধা। প্রকৃতপক্ষে কথাটি সত্য নয়। কেননা, ইসলাম নারীকে গৃহবন্দী এবং নিষ্ক্রিয় করে রাখতে চায় এমন নয়। বরং ইসলাম নারীকে জাতীয় জীবনের উন্নতি অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনের তাগিদ দেয়, কেননা জাতির ভবিষ্যত তাদেরই কোলে গড়ে উঠে। মা মাতৃকেই তার সন্তানকে চরিত্রবান, বিভিন্ন গুনের অধিকারী করে প্রস্তুত করতে হয়। এটি তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ দায়িত্ব। তারা যদি এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, তবে এটিই হবে জাতীয় উন্নতির ক্ষেত্রে তাদের বিরাট অবদান। বর্তমান যুগে নারী স্বাধীনতার যে ধুঁয়া উঠেছে এবং মাতৃজাতিকে রাজপথে টেনে আনা হয়েছে, পরিনামে সন্তান তার মায়ের স্নেহ প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একারণেই এখন সুশিক্ষিত সুনাগরিক এবং চরিত্রবান যুবক খুঁজে পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। যে সত্যটি সকলকেই উপলব্ধি করতে হবে, তাহলো নারীজাতির কর্মক্ষেত্র তার গৃহ, বাইরে নয়। পুরুষের কর্মক্ষেত্র বহিঃবিশ্ব। জীবন সাধনায় নরনারী উভয়ের দায়িত্ব অতীব গুরত্বপূর্ণ। পুরুষ সাফল্যের মনিমানিক্য সংগ্রহ করে আনবে। আর নারী তা সংরক্ষণ করবে। অতএব, প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আজকের দুনিয়ার যে অশান্তি বিরাজমান, তা দূর করার একমাত্র পথ হলো পবিত্র কুরআনের শিক্ষাগ্রহণ এবং প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিপূর্ণ অনুসরণ। আলোচ্য আয়াতে নারীজাতি সম্পর্কে যে পথ নির্দেশনা রয়েছে, তার প্রেক্ষিতে ইসলামী শরীয়ত কয়েকটি বিধান প্রনয়ন করেছে
    (১) নারীদের অপ্রয়োজনে এত উচ্চস্বরে কথা বলা বৈধ নয়, যা পুরুষ শ্রবণ করে। (২) নারীদের আযান দেওয়া বৈধ নয়। (৩) একান্ত জরুরী না হলে বাড়ী থেকে বের হবেনা। (৪) তারা তাদের চক্ষুর হেফাজত করে চলবে। তথা পর পুরুষের প্রতি দৃষ্টি করবেনা। (৫) যদি কোন পর পরুষের সাথে কথা বলার একান্ত প্রয়োজনই হয় তবে তা বলতে হবে পর্দার আড়াল থেকে। (৬) নিতান্ত প্রয়োজনে নারীদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কয়েকটি শর্তে-
    (ক) বাইরে যেতে হলে অবশ্যই পর্দা করে যেতে হবে। (খ) কোন প্রকার সুগন্ধি ব্যবহার করে বাইরে যাবেনা। (গ) অভিভাবক অথবা স্বামীর অনুমতি ব্যতীত বাইরে যাবেনা। (ঘ) স্ত্রীলোক রাস্তার মধ্য দিয়ে চলবেনা, বরং একপার্শ্ব দিয়ে হেটে যাবে।
    (৭) ইসলামী শরীয়ত এনির্দেশ দিয়েছে যে, কেউ যেন কারো গৃহে অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ না করে। বর্বরতার যুগের অন্যায় অনাচার এবং ব্যভিচারের পথ রুদ্ধ করার নির্দেশের পর আলোচ্য আয়াতে শরীয়তের এমন কিছু বিধান পেশ করা হয়েছে যা পালনের মাধ্যমে মানুষ আধ্যাত্বিক উন্নতি লাভ করতে পারে এবং মানুষকে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়, আর তা হলো যথানিয়মে, যথাসময়ে সঠিকভাবে নামাজ কায়েম করা ও যাকাত আদায় করা দুঃখী মানুষের দুঃখ নিবারণে আত্মনিয়োগ করা। এ সমস্ত নির্দেশের একমাত্র কারণ হলো, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে পাপাচার থেকে দূরে রাখতে চান। তোমরা যেন এমন কাজ থেকে বিরত থাক যা আল্লাহ তাআলার অপছন্দনীয়।

    Facebook Comments Box

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    নিয়ত অনুসারে নিয়তি ও পরিনতি

    ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫১৬
    ১৭১৮১৯২০২১২২২৩
    ২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
  • ফেসবুকে আওয়ারকণ্ঠ২৪.কম