এস. এম. অলিউল্লাহ খান, নবীনগর প্রতিনিধি | ২৩ এপ্রিল ২০১৯ | ১:০৮ অপরাহ্ণ
ক্লাসে পড়া না পারার মুল্য দিতে হল নিজের একটি চোখের মাধ্যমে, ফলে সারা জীবনের জন্য দু-চোখে আলো দেখা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুল শিক্ষার্থী। ঘটনাটি গত ১০ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়ীয়া নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট অমর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে। শিক্ষকের বেতের আঘাতে ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর রিফাত নামে এক শিক্ষার্থীর বাম চক্ষু নষ্ট হওয়ার পথে। পরিবারের অভিযোগ এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত করছেনা স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আহত শিক্ষার্থীর পরিবার।
জানা যায়,উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের সিজিল মিয়ার ছেলে মোঃ রিফাত মিয়া বিদ্যাকুট অমর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। গত ১০ এপ্রিল উক্ত বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক মোঃ জাবেদ এর দ্বিতীয় ঘন্টার সময় রিফাত পড়া না পারার কারনে শাসন করার নামে তাকে বেত্রাঘাত করেন ওই শিক্ষক, বেত্রাঘাত করার সময় বেত গিয়ে রিফাতের চোখে লাগলে চিৎকার করতে শুরু রিফাত। তার সহপাঠিরা প্রথমে তার চোখে পানি দেয়, তাতেও যন্ত্রনা না কমায় তার এক সহপাঠির সহযোগিতা নিয়ে স্থানীয় ডাক্তার মাহবুব এর কাছে গেলে ডাক্তার তার চোখের অবস্থা মারাত্বক অবনতি দেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলে রিফাতের পিতা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে যাওয়ার পর সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, তার চোখ অপারেশণ না করা পর্যন্ত কিছু বলতে পারবে না,এবং চোখ অপারেশন করলে চুখ ভাল না হওয়ার সম্ভাবনা ৯৫% ।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে প্রথমে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি বলেন, আমরা জেনেছি অন্য একটি ছাত্রকে বেত দিয়ে শাসন করার সময় বেত ভেঙ্গে গিয়ে রিফাতের চোখে লাগে।
আহত রিফাত জানান, ক্লাসে ইংরেজী পড়া না পারার কারনে তাকে জাবেদ স্যার বেত্রাঘাত করার সময় বেত ভেঙ্গে গিয়ে চোখে লেগেছে।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি সফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে ছুটে গিয়েছি, ডাক্তারের সাথে কথা বলেছি। ওই শিক্ষার্থীর সার্বিক খোঁজ খবর নিচ্ছি, চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করতে আমি প্রস্তুত আছি। খন্ডকালীন শিক্ষক মোঃ জাবেদকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় তিন সদস্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোকারম হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি গতকাল শুনেছি, এ বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে ছাত্র রিফাতের বাবা বলেন, আমার ছেলে এখন দেখতে পারে না, ডাক্তার বলেন চোখ অপারেশন করলে তার চোখ ভাল না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৯৫%। চোখ অপারেশন করাতে যে টাকার প্রয়োজন আমার কাছে সেই টাকা নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ রিফাতের চিকিৎসায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিচ্ছেনা। তাই বাবা হয়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে ছেলের অন্ধত্ব হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তার মন আর সইছেনা। ছেলের দ্রুত সুস্থতা কামনার জন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া চেয়েছেন এবং এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ |