| ০৫ মার্চ ২০১৯ | ১:৫৬ অপরাহ্ণ
একটি দেশের অগ্রযাত্রার পিছনে সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখে তরুণেরা। তরুণেরা যখন তাদের মহামূল্যবান সময়কে অকারণে নষ্ট করে তখন পুরা জাতি যেন একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশই তরুণ। অর্থাত্ ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা হলো চার কোটি ৭৬ লাখ। বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। কিন্তু প্রশ্ন একটা থেকেই যায়, এ দেশের উন্নয়নের প্রধান কাণ্ডারি অর্থাত্ তরুণেরা কি পাচ্ছে উন্নত বিশ্বের প্রতিযোগিতার সঙ্গে লড়াকু সৈনিক হিসেবে নিজ দেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে? পারছে কি তারা প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করতে নাকি প্রযুক্তিই তাদের ব্যবহার করছে? রাষ্ট্রের অর্পিত দায়-দায়িত্ব তারা কি সঠিকভাবে সম্পাদন করছে নাকি তাদের স্বপ্নগুলো সঙ্গে নেশার ধোঁয়া কিংবা পরিকল্পনাহীনতার গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে? আমাদের দেশের অধিকাংশ তরুণরাই উদ্ভাবনী না হয়ে অনুকরণকারী হয়ে যাচ্ছে, টেক্সটবুক না ধরে ফেসবুক ধরছে। আমরা দিন দিন পশ্চিমা সংস্কৃতিটা গ্রহণ করছি কিন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাচেতনা, উদ্ভাবনী শক্তিটাকে অনুসরণ করতে পারছি না। আধুনিকতার নামে, অপরিপক্ব অধিকাংশ তরুণেরা পিতামাতাকে বাধ্য করছে একটি স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার জন্য। প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগতেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্ত হয়ে পড়ছে লাগামহীনভাবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইক, কমেন্ট, শেয়ার, বিধ্বংসী গেমস এবং কুরুচিপূর্ণ ভিডিও-এর জগতে প্রবেশ করছে ক্রমে ক্রমে। তারপর শুরু হয় আবেগময় যোগাযোগ এবং পরস্পর সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি। ফোনের অপর প্রান্তে বিপরীত লিঙ্গের কণ্ঠ শোনার প্রত্যাশায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে অনেকে। কণ্ঠ শুনতে দেরি, সবকিছু ছেড়ে মত্ত হয় ফোনালাপে। দীর্ঘ সময় ধরে উদ্দেশ্যবিহীন কথাবার্তার মাধ্যমে অতিবাহিত করে তাদের মূল্যবান সময়টাকে। তারা কখনোই ভাবে না যে এই সম্পর্কের ভবিষ্যত্ কি বা নৈতিকতাহীন এরূপ কথা তার ব্যক্তি এবং সামাজিক জীবনে কিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাদের অবচেতন মন, নিজের অজান্তেই যা পুনঃপুনঃ করে তাই অভ্যাসে পরিণত করে। আর এইভাবে যদি তাদের অভ্যাস গড়ে উঠে, তাহলে উত্তম এবং নিষ্ঠাবান চরিত্রের অধিকারী হবে কিভাবে।
আবার যখন এই তরুণরাই ব্যর্থ হবে তখন শেক্সপিয়রের বিখ্যাত উক্তিটি বলবে ‘আমি নষ্ট করেছি সময় এখন সময় নষ্ট করছে আমায়’। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রিধারীরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে। জীবন যুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হলে অন্যদের থেকে অবশ্যই অতিরিক্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। সুতরাং, তরুণদের উচিত তাদের মেধা ও প্রজ্ঞাকে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ না করে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সার্বিক বিষয়ে জ্ঞানের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা। চেষ্টা ও কঠোর অধ্যবসায় ছাড়া ভাগ্যের প্রসন্নতা লাভ করা সম্ভব নয়। লক্ষ্যের দিকে স্থির দৃষ্টি রেখে এগিয়ে যেতে হবে সকল প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে। প্রত্যেকের মধ্যে কিছু সুপ্ত প্রতিভা বিরাজমান এবং কিছু কার্যকর পদ্ধতির মাধ্যমে সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে দেশের জাতীয় ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ থেকে সহজতর হবে।
n লেখক: শিক্ষার্থী-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |