| ১৫ নভেম্বর ২০২২ | ৪:৪৪ অপরাহ্ণ
মানব জীবনের শতদিক। এই শতদিক, কখনও বিচ্ছিন্ন – কখনও অবিচ্ছিন্ন। কোথাও ধর্মীয়,কোথাওবা ধর্ম বহির্ভুত। ধর্মের জন্য মানুষ না মানুষের জন্য ধর্ম, এই সমাধান হলো, “উভয় উভয়ের”।
♦ ধর্মকে ঘিড়ে চলছে জীবন ব্যাবস্থা। কেউ মসজিদ ঘেড়া,কেউ মাজার ঘেড়া,কেউ তবলীগ ঘেড়া,কেউ খানকাহ্ ঘেড়া,কেউ কিতাব ঘেড়া,কেউ পুঁথি ঘেড়া,কেউ রাজনীতি ঘেড়া,কেউ পেটনীতি ঘেড়া,কেউ আলোচনায় ঘেড়া,কেউ সমালোচনায় ঘেড়া, এমনই নির্দিষ্ট বলয়ে চলছে মানব চিন্তাচেতনা। কথন-বলন ও লিখনীতে স্পষ্ট হয়ে উঠে, প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান।
♦ সমস্ত বলয়েই রয়েছে,সাধনা ও আরাধনা। তর্ক-বুদ্ধি এবং যুক্তি দিয়ে চলে, আপন বলয়ে বিচরন। খুঁজে দেখার সময় মিলেনা, জ্ঞান উর্ধ্বমূখী না নিম্নমূখী, সংস্কার না ফিৎনা,আলোমুখী না অন্ধকারমুখী,হক না বাতেল। কিন্তু চলছে ক্ষয়িষ্ণু মানবজীবন ধারা। প্রতিবাদ হয় সংঘাত দ্বারা, উপদেশ চলে চিৎকার দিয়ে, আলোচনা হয় সমালোচনার সুরে, ধর্মীয় অনুভূতি সৃষ্টির স্থলে, হিংসাত্বক কূরূচি কথার দফতর চলছে। একে অপরকে গালমন্দ করছে, অশ্লীল ভাষার ছড়াছড়ি, ব্যাঙ্গাত্বক নিত্যনুতন নামের আক্রমন। মূলতঃ ধর্মীয় সংস্কার নাস্তি। হানাহানি-মারামারি-কুঁদাকূঁদি-ঠেসাঠেসি-রেশারেশি এবং কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি দিয়ে চলছে ধর্মীয় অঙ্গন। ধর্মভীরু অল্পজানা সাধারনগণ, অতি কষ্টে সময় অতিবাহিত করছে। গুটি কয়েক শব্দ ও বাক্য এখন অভিধানে ; বিদায়াত,শেরেক,কাফের, মোল্লা,পীর,মাজার,তবলীগ। কেউ কাউকে ছাড়ছে না। ডান হাত দিয়ে বাম হাতে কামড়, আবার বাম হাত দিয়ে ডান হাতে কামড়। নিজেরাই কামড়াচ্ছি নিজেদেরকে।
♦ এই শতঘেড়ার মাঝে রয়েছে, প্রভাত রাতের উর্ধ্বশ্বাশী দ্রুতগামী ঘোড়সওয়ারী দল। যাঁদের লৌহক্ষুরের আঘাতে প্রস্তর হতে বিচ্ছুরিত হয় অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। ‘আল্ ওয়াদুদ্’ রঙ্গে রঞ্জিত একদল ‘মাহফুজ’ প্রেমিক। যাঁরা আত্বসমালোচনা এবং আত্বশুদ্ধির মহড়ার কঠিন প্রশিক্ষনে আবদ্ধ ; বুঝেনা রাজনীতি,বুঝেনা পেটনীতি,বুঝেনা আবোল-তাবোল প্রলাপ,সমাজবদ্ধতার মাঝে ও নোংরা সামাজিকতার উর্ধে,সাক্ষাতে সর্ব সম্পৃক্ত – কিন্তু নিয়ন্ত্রিত ঐশী শব্দ সংকেত প্রেরণায়। আল্লাহ পাকের হুকুম,রাসুলের আদর্শ এবং আহলে বাইয়াতের মহব্বতে, নিজেকে ব্যাস্ত রাখে উর্ধ্বমুখী বাস্তব জ্ঞানের আধারে।
♦ কর্ম- জ্ঞান-প্রেম এই তিনে তাঁদের বিহার-বিচরন। সসীম হতে অসীমে থাকে ভ্রু-যুগল উম্মেলিত। কর্ণ থাকে উৎকীর্ণ -শব্দসঞ্চয়ে, সদাজাগ্রত নববধূর ন্যায় বর আগমন অভিসার আঁশে, চিত্তচঞ্চল তারুন্যতায় বিরাজিত, অগ্রবর্তী দলের অনুগামী, আলোর দিশারী, সত্যপথ যাত্রী, বদর-ওহুদ-খন্দক প্রেমিক সেনানীর মতো আনুগত্যে কোরবান, আল কোরানের ভাষায় জ্ঞানবৃদ্ধ মূর্শেদ।
♦ ‘ইনছানে কামেলে’র নজরদারীতে জীবন ব্যাবস্থা পালনকারী এই ঐশী প্রেমিক দল, না নির্দিষ্ট লেবাসধারী – না খেতাবধারী-না কোন ডিগ্রিধারী (সবই আছে কিন্তু নাই) ; শুধু পরিচয় উম্মতে মোহাম্মাদীর প্রেমিক বান্দা মোমেন। “হেরা’র” আলোতে তাঁরা আলোকিত। দার্শনিক,প্রাবন্ধিক,ওয়ায়েজীন, বহুল আলোচিত হতে সদাসতর্ক। কেহবা পরিচিতি পায়, কেহবা পায় না। কারবালা ত্যাগি শিক্ষাকে অবলম্বন করে, ভোগী কর্মকান্ডের বাহিরে চলেন।
♦ আছেন তাঁরা অবহেলিত ভাবে, ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে নি:শব্দে।
♥♥ হে আল্লাহ্! দয়া করুন, তৌফিক দান করুন, আপনার হাবিবে’র ওয়াস্তে, যেনো খুঁজে পাই প্রকৃত মূর্শেদ এবং উত্তীর্ণ হতে পারি আত্বশুদ্ধি বলয়ে। আমিন।
লেখক: ড. সুফি সাকি জাহাঙ্গীর। দরবারে আ’লী গোল্ডাশরীফ,কোনাবাড়ী,নদীর পাড়,ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।