লেখক: মুফতি ছালেহ বিন আব্দুল কুদ্দুস, অতিথি লেখক | ০৫ এপ্রিল ২০২০ | ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ
গোলাম মওলা রনিকে টেনে এনে আমার প্রবন্ধকে কলুষিত করতে চাইনি। এখনও তাকে নিয়ে আলোচনা করার কোন আগ্রহবোধ করিনা। কিন্তু স্রেফ সতর্ক করার উদ্দেশেই মাথামোটা এই পাগলের পোস্টমর্টেম করাটা প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। পাঠকের কাছে অনুরোধ, শিরোনামের সাথে এর সম্পর্ক খুজতে গিয়ে বিভ্রাটে পড়বেন না। কারণ, কোন মতিগ্রস্তকে মেধাবীদের তালিকায় এনে মেধার অপমান করার দুঃসাহস আমি দেখাতে পারিনা।
সে এক বক্তব্যে দেশের সকল আলেমকে কাঠমোল্লা আখ্যায়িত করে কথিত ফতোয়াবাজ ও দিকভ্রান্ত এক যুবকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে। এই বাচাল এতবার কাঠমোল্লা শব্দটা উদগীরণ করেছে যে, আমার কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছিল। খুবই বিস্ময়াভিভূত হলাম যখন দেখলাম, দাড়িহীন ফাসেক এই লোকটা আলেমদেরকে কবীরা গোনাহ কাকে বলে তা শেখাচ্ছে। আরো কত যে বকবক করল! আসল সমস্যা হলো, ইউটিউব-গুগল ও ফেসবুকের মডারেট ইসলামের প্রবক্তাদের বুলি আওড়িয়ে সে সব আলেমের চোখে আঙ্গুল রেখে কথা বলার স্পর্ধা দেখিয়েছে। হ্যাঁ! পরিস্থিতি এখন এমনই দাঁড়িয়েছে। অনলাইনজগতে নিয়মিত রনাঙ্গণের দৃশ্য দেখতে হয়। এক বক্তা আরেকজনকে ধুয়ে দেন, বাচাল জাহেল-মূর্খরা হক্কানী আলেমদেরকে গালী দেয়। জাতির মেধাশ্রম আজ এভাবেই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে ভুলপথে। আমরা বরাবরই দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করছি, ওরিয়েন্টালিজমে বিশ্বাসী এক শ্রেণীর মডারেট মুসলিম দ্বীনী জ্ঞানার্জনে কিতাব অধ্যয়ন ও যোগ্য ব্যক্তির সাহচর্যগ্রহণের পরিবর্তে ইন্টারনেটকেই শিক্ষক হিসেবে বরণ করে নিয়েছে। যদ্দরূণ, ফেতনা-ফাসাদ ও অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে মুসলিমসমাজে। এই বিপর্যয়ের কথা ভেবেই শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকী উসমানী দা.বা. বলেন, ‘‘যে কোন প্রশ্ন বা সংশয়ের জবাব পেতে ইন্টারনেটের সামনে না বসে বিজ্ঞ আলেমের শরণাপন্ন হোন।।’’
মস্তিষ্কে পচনধরা কিছু লোকের অবস্থা এমন হয়েছে যে, শুধু বক্তাদের ওয়াজের নির্দেশনা অনুযায়ীই নিজেদের জীবনপদ্ধতিকে আবর্তিত করে। নিভৃতচারী প্রচারবিমুখ শত আলেমের ফতোয়াকেও ছুড়ে ফেলে দেয় সুরেলা কোন বক্তার ভুল কথায়! আরো আক্ষেপের বিষয় হলো, কওমী মাদরাসার প্রতিনিধিত্বের দাবী করে অযোগ্য কিছু বক্তা এমনসব উদ্ভট কথা বলে যাচ্ছে যা সম্পূর্ণ শরীয়তবিরুধী। সোশ্যাল এক্টিভিটির একটি বিস্তীর্ণ দিকের কার্যক্রম এভাবেই অধ্যয়ন ও গবেষণাবিহীন চালিত হয় এবং সময়ের কাটা এগিয়ে যায়। আর অপাত্রে মেধা ব্যয় করে গড়ে ওঠছে অন্তসারশূন্য এক ডিজিটাল প্রজন্ম!!
লেখক: মুফতি ছালেহ বিন আব্দুল কুদ্দুস
প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক: শাহবাজপুর, বি-বাড়িয়া, বাংলাদেশ।