কে.এম. সুহেল আহমদ,কাতার থেকেঃ | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ
আনন্দ উদযাপন ও বর্ণীল আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় দিবস উদযাপন করলো মধ্য প্রাচ্যের একমাত্র ধনী দেশ কাতার। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক থিম প্যারেডে অংশ নিয়ে সফলতা লাভ করেছে বাংলাদেশি কমিউনিটি।
১৮ ডিসেম্বর(মঙ্গবার) বিকেলে দোহার অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ‘এশিয়ান টাউন’র পাশে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কাতারের জাতীয় দিবস কে ঘিরে গত তিন সপ্তাহের রুদ্ধশ্বাস প্রস্তুতি ও অনুশীলন শেষে কাতারের জাতীয় দিবসটিতে ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি ‘ কাতারের ব্যানারে ৭ টি থিম প্যারেডে প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশী প্রবাসীরা। সাতটি টীমের মধ্যে যথাক্রমে টীম সন্দ্বীপ, টীম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, টীম কুমিল্লা, টীম ঢাকা, টীম চট্টগ্রাম, টীম সিলেট ও টীম খুলনা।
এবছর ও থিমের কনসেপ্ট ডিজাইনের গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয় বিশিষ্ট কলামিষ্ট ‘বাংলাদেশ লেখক- সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন কাতার’র’ সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ (নূর)।
গত বছরের ন্যায় এবছরও থিম প্যারেডে অন্যান্য দেশের প্রবাসীদের পিছিয়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা তাদের থিম প্যারেডে কৃতিত্বপূর্ণ
সফলতা অর্জন করায় প্রায় সাড়ে চার লাখ বাংলাদেশী প্রবাসীর মধ্যে যেন আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়।
কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হাত থেকে বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষে সফলতা অর্জন স্বরুপ উপচয়পত্র (Appreciation letter) ও ক্রেস্ট গ্রহণ করেন আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আকন, নুর মোহাম্মদ নুর, সাইফুল আমিন, আমিনুল হক, নজরুল ইসলাম, সফিকুল ইসলাম (বাবু), আলীম উদ্দিন ও সালাহ উদ্দিন সহ কমিউনিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
থিম প্যারেডে বাংলাদেশি টীমদের এহেন সফলতা অর্জনের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রমীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ । তাদের মতে বাংলাদেশী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরার পর প্রাপ্ত অর্জন শুধু আমাদের কারও একার নয়, এই অর্জন কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সবার।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে কাতার’র সংসদ ভবনের পাশে পর্যটন খ্যাত সমুদ্র তীরবর্তী বিনোদন কেন্দ্র দোহা কর্নিশে বর্ণাঢ্য প্যারেডের আয়োজন করে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে প্রায় লক্ষাধিক কাতারি অংশ নেয়। কাতারিদের পাশাপাশি এই আয়োজনে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরাও আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে।
এছাড়া দেশের স্টেডিয়াম, মুক্তাঙ্গন, পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে আতশবাজি, কার রেস, থিম প্যারেড ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শুধু তাই নয়, পশ্চিমাকাশের লাল সূর্য অস্তমিত হওয়ার সাথে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসে যখন রাত হল ঠিক তখনি আতশবাজীর বিজলীর ফোয়াড়া কর্নিশ পাড়ের বীচে সমুদ্রের পানি ও মধ্যাকাশ এক অপরুপ সৌন্দর্য্যের রুপ ধারণ করলো। জাতীয় দিবস উপভোগ করতে আসা বিভিন্ন দেশের হাজারো প্রবাসী তা অবলোকন করে বিমোহীত হলেন।
উল্লেখ্য যে, কাতার আমিরের সচিবালয়ে ইতিহাস বিশেষজ্ঞ একজন বাংলাদেশী ৬৪ বছর বয়সি ডঃ হাবিবুর রহমান। যিনি ৩১ বছর ধরে কাতারের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে বের করে এনেছেন কাতারের সঠিক ইতিহাস। ২০০৭ সালের আগে ৩ সেপ্টেম্বরে জাতীয় দিবস পালন করতো কাতার। কিন্তু কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার শাহপরী দ্বীপের কৃতি সন্তান ডঃ হাবিবুর রহমানের দীর্ঘদিনের গবেষণালদ্ধ ফলাফলে বেরিয়ে আসে কাতারের জাতীয় দিবস ১৮ ডিসেম্বর। তখন থেকেই ‘১৮ ডিসেম্বর’ যথাযোগ্য মর্যাদায় কাতারের জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।