| ১২ মার্চ ২০২০ | ৩:১১ অপরাহ্ণ
চীনের উহান থেকে শুরু হওয়া করোনা ভাইরাস বা কেভিড১৯ বর্তমানে বিশ্বের প্রায় শতাধিক রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুইদিন আগে আমাদের এই ছোট্ট দেশেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। ইতোমধ্যে সরা বিশ্বে প্রায় ৩হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। আক্রান্ত প্রায় ১ লাখের উপরে। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রত্যেক নামাজের পরে আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া-কান্নাকাটি এবং গুনাহ থেকে খাঁটি দিলে তাওবা করার আহবান জানান হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী।
গতকাল ১১ মার্চ বি-বাড়িয়া নাসিরনগর ‘ভূবন ইসলামি সেবা কল্যাণ সংস্থার’ উদ্যোগে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী ২৩ তম তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে ২য় দিনের শেষ অধিবেশনে প্রধান অতিথির আলোচনায় মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী আরো বলেন, সম্প্রতি চীন থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস ‘করোনা’র সাথে কিছুদিন আগেও মানুষের পরিচয় ছিলো না। কারণ, এই ভাইরাস এর আগে কখনো দেখা যায়নি। মানুষ যখন ব্যাপক হারে আল্লাহ তাআলার অবাধ্য হতে থাকে তখন আল্লাহ পাক পৃথিবীতে এমন গজব নাজিল করেন। যাতে মানুষ তাদের ভুল বুঝতে পেরে তাওবার মাধ্যমে আবার আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। মহামারি কিংবা ভাইরাস নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন শতাব্দিতে বিশ্বব্যাপী এমন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। রাসূল সা. এর সময়েও এমন মহামারি রোগ ছড়িয়েছিল। এমন গজব বা মহামারির সময় করণীয় সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যে কোন মহামারি থেকে বাঁচতে প্রথম ও প্রধান করণীয় হচ্ছে- নিজেদের কৃতকর্ম থেকে তাওবা করা এবং বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। এছাড়াও বুখারী শরীফের ৩৪৭৩ নং হাদীসে মানবতার মুক্তির দূত রাসূল সা. এর সমাধান দিয়ে বলেছেন, যদি তোমরা মহামারীর কোনো সংবাদ শোন, তো সেখানে তোমরা প্রবেশ হতে বিরত থাক। আর যদি কোনো শহরে বা নগরে কেউ সে মহামারীতে আক্রান্ত হয়, সেখান থেকে তোমরা বের হয়ো না।’
মাওলানা নিজামপুরী আরো বলেন, আজ আমাদের উপর যত আজাব গজব, দুর্যোগ-মহামারি আসছে সব আমাদের গুনাহের ফল। আল্লাহ তাআলা সূরা রুমে ইরশাদ করেন, মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদেরকে কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। তাই আমাদের সকল গুনাহ পরিত্যাগ করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তাওবাহ, ইসতেগফার, দুআ কান্নাকাটি ও মসজিদে মসজিদে কুনূতে নাজেলার আমল চালু করতে হবে।
মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী আরো বলেন, মহামারি আল্লাহর গজব হলেও এতে আক্রান্ত মৃত মুসলিম ব্যক্তিকে পাপী-জাহান্নামি মনে করা যাবে না। রাসুল সা. এর ভাষায় মহামারিতে মারা যাওয়া ব্যক্তিও শহীদ।হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, পাঁচ প্রকার মৃত শহীদ, মহামারিতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে শহীদ হলো। অন্য এক হাদিসে আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত আছে, আল্লাহর রাসুল সা.বলেছেন, মহামারিতে মৃত্যু হওয়া প্রতিটি মুসলিমকে শাহাদাতের মর্যাদা দেওয়া হবে।
সকল প্রকার গুনাহ পরিত্যাগ করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেখানো পথ ও মতকে মেনে জীবন গড়ার আহবান জানিয়ে মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন, নিজের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়- আন্তর্জাতিকসহ সর্বক্ষেত্রে গুনাহ থেকে বেঁচে আল্লাহ তায়ালার হুকুম, শরীয়তের এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শমতে জীবন পরিচালনা করতে হবে৷
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |