• শিরোনাম


    ওয়াজ মাহফিলে ফেসবুক ইউটিউব রছমি আলেমের প্রভাব: মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজি

    | ২১ মার্চ ২০১৯ | ৬:০৬ অপরাহ্ণ

    ওয়াজ মাহফিলে ফেসবুক ইউটিউব রছমি আলেমের প্রভাব: মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজি

    সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্বীন প্রচারের অন্যতম মাধ্যম ওয়াজ মাহফিল। যুগে যুগে প্রেরিত নবী রাসুলদেরও দ্বীন প্রচারের মাধ্যম ছিল এটি। ওয়াজ মাহফিলে এসে সাধারণ মানুষ দ্বীন ইসলামের নানা বিধি-বিধান সম্পর্কে জানতে পারে। বলতে গেলে বাংলাদেশে যে ইসলামী আবহাওয়া বিরাজ করছে এর পিছনে ওয়াজ মাহফিলের বড় একটা অবদান আছে।

    কিন্তু বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ ওয়াজ মাহফিল বিনোদন ও ফ্যাশনে রূপান্তরিত হয়েছে। বেশি লোক জমায়েত করার প্রবণতা বিপদজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে আয়োজকদের মধ্যে। যার ফলে, বিনোদন বক্তা কিংবা আকর্ষণীয় বক্তার পিছনে ছুটছেন তারা। শিশু বক্তা, মহিলা বক্তা, নও মুসলিম বক্তা, কোকিল কন্ঠ, এতো ইঞ্চি ইত্যাদি বক্তার খুঁজে থাকছেন পাগলপারা।



    একটা সময় ছিল মানুষ যখন ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করত আলেম-ওলামাদের কাছে গিয়ে বলতো যে, আমরা একটি মাহফিল আয়োজন করতে চাই। কোন আলেম কে দাওয়াত দিলে ভালো হবে আমাদেরকে পরামর্শ দিন। এখন মানুষ নিজেরাই আলেমদেরকে পরামর্শ দেয় যে, তাকে দাওয়াত দেন তাহলে লোকজন বেশি হবে। অমুক বক্তা হাসাতে পারে, অমুক বক্তা কাঁদাতে পারে, দাওয়াত দেন লোক জমায়েত হবে।

    লোক জমায়েত করা কিংবা মানুষকে বিনোদন দেয়া প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে গেছে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের। সে আলেমের ওয়াজ শরীয়তের বিধি-বিধান সম্পর্কিত হবে কিনা, ব্যক্তি জীবনে সে শরীয়তের কতটা অনুসারী, তার ভেতরে শরীয়তের সিদ্ধান্তমূলক ইলম আছে কিনা সে বিষয়ে কোনো খোঁজ খবর রাখা হয় না। চটকদার কিছু কথা আর সুরেলা আওয়াজ ও কমেডিয়ান হওয়ার কারণেই তাকে দ্বীনের দায়ী মনে করা হয়।

    মূলত ফেসবুক ইউটিউবের প্রভাবের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুক ও ইউটিউব-এর রঙ্গিন দুনিয়া দ্বারা মানুষ যথেষ্ট প্রভাবিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে রছমি আলেমদেরকেও দায় দিতে হয়। কেননা লোকেরা তাদেরকে আলেম মনে করে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়। অথচ তাদের ভেতরেও শরীয়তের সিদ্ধান্তমূলক ইলম নেই। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকার কারণে কিংবা সমাজের একটা অংশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বলে লোকেরা তাদের ধারস্থ হয়। সঠিক বিবেচনায় আসলে এই রছমি আলেমদেরকেই দায় দিতে হয়। কারণ, তারা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, শরীয়তের চাহিদা অনুযায়ী মানুষকে সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না।

    এ অবস্থার একটি সূক্ষ্ম প্রভাব ইতিমধ্যে সচেতন মানুষের উপর পড়তে শুরু করেছে। তারা দিন দিন ওয়াজ মাহফিল বিমুখ হয়ে পড়ছেন এবং এর কারণে একটা শ্রেণি ইউটিউব এবং সামাজিক মাধ্যমে বক্তাদেরকে নিয়ে ট্রল করার সুযোগ পাচ্ছে। পত্রপত্রিকায়ও প্রকাশিত হচ্ছে নানা নেতিবাচক আর্টিকেল।
    সচেতন আলেম-ওলামাদের কাছে আমার বিনীত আহ্বান, আপনারা এখনই সতর্ক হোন, না হয় সাধারণ মানুষের কাছে দ্বীন পৌঁছানোর সুন্দর এই পদ্ধতিটি ধীরে ধীরে সংকীর্ণ জায়গায় গিয়ে পৌঁছবে।

    Facebook Comments Box

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০
    ১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
    ১৮১৯২০২১২২২৩২৪
    ২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
  • ফেসবুকে আওয়ারকণ্ঠ২৪.কম