লেখক: ম. কাজী এনাম | ১৭ মার্চ ২০১৯ | ৬:২৪ অপরাহ্ণ
আমরা মুসলিমরা বীরের জাতি হয়েও নিম্নবর্ণ বদ্বীন কর্তৃক মার খাওয়ার অনেকগুলো কারনের মাঝে উল্যেখযোগ্য কয়েকটি;
১। আমরা আজকে বহুদলে বিভক্ত। আমাদের মাঝে একতা নাই। একজন একটু উঠে দাঁড়ানো শিখলেই সাথেসাথে সেই বিশেষ লোক কর্তৃক নতুন দল বা গ্রুপের আবির্ভাব। শুরু হয় নিজেদের মাঝে সামান্য মতাদর্শ, মতের ভিন্নতা নিয়ে মনোমালিন্য, বিভেদের সৃষ্টি। আর এহেন মুহুর্থে আমাদের পেছনে লেগে থাকা রক্তপিপাসু হায়েনারা সুযোগ নেয়।
২। ক্ষমতার লোভ, অর্থের লিপ্সা, নারীর মোহ এমন ধরনের নানানরকম পাপাচার আমাদের মাঝে আজ দুর্বলতার সৃষ্টি করেছে।
৩। নিজেদের মাঝে সৃষ্টিশীলতার অভাব। অথচ একটা সময় পৃথিবীর সৃজনশীল কোন কাজ বলতেই ছিল ‘একজন মুসলিম’! বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, সাহিত্যিক, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ সহ বিভিন্ন বিষয়ে মুসলিম প্রধান বিজ্ঞজন ছিল। যা এখন কেবল অতিথ ইতিহাস।
৪। নামাজ সহ ইসলামের মৌলিক আমলে অবহেলা। একটা এলাকা বা মহল্লায় একশো মুসলিম ফ্যামিলি থাকলে অন্ততপক্ষে কয়েকশো নামাজি থাকার কথা। অথচ মসজিদের প্রথম কাতারই খালি থেকে যায়। আর অন্যান্য আমল যেমন পর্দা, হালাল ইনকাম বা এই জাতিয় কিছু টপিক আছে, নাম বললে আর রক্ষে নাই।
৫। বদ্বীন ও কুফফারদেন প্রতিষ্টান অগ্রাধিকার দেয়া। আমাদের যারা মারতেছে সামান্য ইংলিশ মিডিয়াম টাইপের হওয়ার জন্য আমাদের সন্তানদের তাদের প্রতিষ্টানে শিক্ষার্জন করতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। অথবা উন্নত চিকিৎসার আশায় তাদের ধর্মীয়(ইহুদী-খ্রীষ্টান-বৌদ্দ-হিন্দু) সিলমারা প্রতিষ্টানে নিয়ে যাচ্ছি। অথচ বিকল্প খুজলে এব্যাল্যাবল পাওয়া যায়। একটু ইংলিশ ভার্সন(সাধারণত) ভালর জন্য আমি আমার সন্তানকে একটা মিশনারি স্কুল-কলেজে ভর্তি করাতে পারিনা, কারন আমাদের রক্তে মিশে আছে তাওহীদি চেতনা।
৬। মুসলিম ব্যবসা প্রতিষ্টানেও আজ বদ্বীনদের কারিকুলাম।
ব্যাংকপাড়া থেকে নিয়ে উৎপাদন উপকরণের প্রাথমিক-মাধ্যমিক-চুড়ান্ত সর্বত্রই ওদের হাত। এমন কি আমদানি-রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক শুল্ক বিষয়ক সকল বিষয়ে এদের পথ অবলম্বন। অন্যদিকে কোন মুসলিম যদি কোন ব্যাবসায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করে তার বিনিময়ে গুণতে হয় বিশাল মাশুল। অনেক মুসলিমরাই ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে দমিয়ে দেয়। যেখানে সঙ্গবদ্ধভাবে সাপোর্ট দেয়ার কথা ছিল, সেখানে মাঝপথে নিজেরাই নিজেদের থামিয়ে দিই।
৭। মিডিয়ার মিথ্যাচার। অনেক রটনাকে ঘটনা, আবার অনেক ঘটনাকে রটনা বানাচ্ছে মুসলিমরাই। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি অথবা বাড়তি সুবিধা ভোগের জন্য এমন মিথ্যাচার করছে অসংখ্য নিজেদের লোক (মুনাফিক মিডিয়াকর্মী)! এর বড় উদাহরণ হল একজন মাতৃভূমি রক্ষাকারী যোদ্ধাকে নির্বিচারে বলা হচ্ছে জঙ্গি, আবার অনেক উগ্র-বর্ণবাদি জঙ্গিকে বলা হচ্ছে বিকৃত মস্তিষ্কজাত একজন অস্রধারী। এসব বদ্বীনদের কর্ম, কিন্তু এসবেই লিপ্ত অসংখ্য মুনাফিক এবং নামধারী মুসলিম। যার জন্ম কোন এক মুসলিম ঘরে, মুসলিম মায়ের উদরে। যদিও জারজ বলেই সন্দেহবিদ্ধ।
#লিখক,
বিএসএস অনার্স (অর্থনীতি), ডাবল এমএ(হাদিস)
উস্তাদ, জামিয়া কুরআনিয়া সৈদুন্নেসা, কাজীপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।