লেখক: মুফতী শামসুদ্দোহা আশ্রাফী, ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া | ০৪ মে ২০১৯ | ১:৩৪ অপরাহ্ণ
ডা.জাকির নায়েক৷ একজন দাঈ। মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বময় ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার কাজ করছেন। তাঁর সুন্দর ও সাবলীল উপস্থাপনা যে কাউকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। তাছাড়া তাঁর বেশিরভাগ লেকচার ইংরেজিতে হওয়ায় ইউরোপ আমেরিকাসহ সারা বিশ্বেই ভাল প্রভাব পড়েছে। ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসার সুযোগ পাচ্ছে মানবসভ্যতা শুণ্য পরিবেশে বসবাসকারী লোকগুলো।
ডা.নায়েক একজন মানুষ। মানুষের ভুলত্রুটি হতেই পারে। ডা.নায়েকের তাই হয়েছে। বিশেষত ফিকহি মাসয়ালা এবং আকীদা’র কিছু স্পর্শকাতর জায়গায় তিনি অনুপ্রবেশ করায় তাঁকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এটাও হয়েছে কিছু আহলে হাদিস/সালাফিপন্থি লোকের কারণে। যারা নিজেদের মতবাদ প্রচার ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ডা.জাকির নায়েক ও তার টিভি চ্যানেলকে ব্যবহার করতে চেয়েছে,করেছে। তারা জাকির নায়েককে নিজেদের মতবাদের বলে প্রচার করলে তিনি বরাবরই জানিয়েছেন তিনি আহলে হাদিস বা সালাফি নন।
অবশ্য উম্মাহর সচেতন আলেমগণ দ্বীনি খাতিরে ওইসব বিচ্যুতি ধরিয়েও দিয়েছেন। পরবর্তীতে যতটুকু শুনেছি ডা.জাকির নায়েক ওইসব বিষয় নিয়ে এখন আর কোন কথা বলেননা। মাসায়েল বা আকায়েদের কোন বিষয় এলে উলামায়ে কেরামের উপর ন্যস্ত করে দেন। নিজে শুধুই ইসলামের দাওয়াত দেন। ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরেন।
ডা.নায়েকের মাধ্যমে ইসলামের যে আওয়াজ মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে হিন্দুত্ববাদী ভারত আর সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কখনোই তা মেনে নিতে পারেনি। এ আওয়াজ বন্ধ করে দেয়ার জন্য একটি যুতসই মাধ্যম খুঁজে ফিরছিলো।
গুলশানে হলি আর্টিজেনে সন্ত্রাসী হামলা তাদের কাংখিত সু্যোগ তৈরি করে দেয়। হামলাকারীদের কোন একজন জাকির নায়েকের ফলোয়ার ছিলেন এমন অগ্রহণযোগ্য অজুহাতে বাংলাদেশ ও ভারতে একই সময়ে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়৷ সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে হামলার জন্য উস্কানি দাতা হিসেবে মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়া হয় তার নাম। আনা হয় বিভিন্ন অমূলক অভিযোগ।
আজ দেখলাম ‘বিবিসি বাংলায়’ তাকে নিয়ে ভুয়া ও মিথ্যা অভিযোগ এনে আবারো মনগড়া সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। আমাদের কিছু মিডিয়াও যাচাই-বাছাই ছাড়া এ সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে। তারা তাকে সন্ত্রাসবাদের উস্কানিদাতা হিসেবে দাঁড় করাতে চেয়েছে।
আমি বিবিসি’র প্রকাশিত সংবাদের কমেন্টে লিখেছি –
সম্পুর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা কথা। ডা.জাকির নায়েক কখনোই সন্ত্রাসবাদের পক্ষে বলেননি বরং বিরুদ্ধে বলেছেন। এমন কোন বক্তব্য কি দেখাতে পারবেন যেখানে তিনি হিংসা,বিদ্বেষ বা উগ্রতা ছড়িয়েছেন? মাজলুম মুসলিমদের পক্ষাবলম্বন করার কারণে যদি তিনি অপরাধী হন তাহলে বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের উপর নিধনযজ্ঞ পরিচালনাকারী কেন সন্ত্রাসী নয়? একটি সংবাদ মাধ্যমে যাচাই-বাছাই বিহীন এমন অগ্রহণযোগ্য ভুয়া সংবাদ পরিবেশন কাম্য নয়। অন্যথায় জাতি আপনাদেরকে সাম্রাজ্যবাদীদের পাচাটা’র দল ও তল্পিবাহক আখ্যা দিবে৷
আমি মনে করি কিছু মতপার্থক্য ও ভিন্নতা থাকা স্বত্তেও ডা.জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে আনিত এ মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ করা জরুরি।