• শিরোনাম


    একজন আল্লামা আহমাদ শফী ও আমাদের সমাজ : মাওলানা মাহমুদ হাসান সিরাজী

    | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ | ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

    একজন আল্লামা আহমাদ শফী ও আমাদের সমাজ : মাওলানা মাহমুদ হাসান সিরাজী

    এ বছরটা আমাদেরকে শুরু করতে হয়েছিল একটা ধর্ষণের খবর দিয়ে। ধর্ষণের খবরটা কম বেশ আমরা সকলেই জানি। এ দেশে ধর্ষণ এখন সমাজেরই একটা অঙ্গে রুপ নিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া বলেন,প্রিন্ট মিডিয়া বলেন আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কথাই বলেন না কেন, কোথাও ধর্ষণের সংবাদ বাদ নাই!

    আমাদের দেশের একটা সমাজ দেখাতে পারবেন ধর্ষণ ছাড়া! সংবাদে তো যেগুলো প্রকাশ পায় বা যেখানে উভয়ের সম্মতি থাকে না শুধু সেগুলোই আসে। নতুবা আধুনিকতার বুলি আওরানো কোন পরিবারটা আছে যেখানে অবাধে যৌনাচার নাই। আমাদের দেশের কোন সেকসনটা আছে যেখানে নারীরা হেনস্তার শিকার হয়নি?



    আজ নারী স্বাধীনতার নামে যারা বড় বড় ব্যানার নিয়ে রাস্তায় নামে, এরাতো অনেকটা শিয়ালের ভূমিকায় থাকে। শিয়াল যেমনি মোরগের স্বাধীনতা চায় শুধু নিজের হীনস্বার্থে, ঠিক তেমনি এরাও নিজেদের অবাধ যৌনাচারের জন্যই নারী স্বাধীনতা চেয়ে থাকে।

    গত একটা সপ্তাহে দেশে কতটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এটা হয়তো কমবেশ সবাই জানি। বিশেষ করে কোনাপাড়া শাহজালাল রোডের ঘটনাটা হয়তো এ দেশের প্রতিটি বাবার অন্তরেই একটা দাগ কেটেছে। এখন প্রতিটি বাবাকেই তার মেয়ে সন্তানকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। প্রতিটি মেয়ের বাবাকেই তার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

    আমিও আমার ৭ বছরের মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত। আমার মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আমি শংকিত। এ দেশ,এ সমাজ, এ পরিবেশ আর মেয়েদেরকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এ দেশের মেয়েরা কোথাও নিরাপদ না। স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি,অফিস,আদালত কোথায় মেয়েরা নিরাপদ, একটু বলবেন?

    এ নিরাপত্তা নিয়ে কাদের ভাবা উচিৎ? এ নিরাপত্তা দেওয়া কাদের দায়িত্ব? এ নিরাপত্তা নিয়ে কাদের আলোচনায় এগিয়ে আসা উচিৎ?

    কিন্তু প্রকৃত নারীবান্ধব কোনো ব্যক্তি,কোনো সংগঠন বা কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেনি।

    কিন্তু যিনি এগিয়ে আসলেন তিনি ৯৯ বছরের একজন বয়োবৃদ্ধ আল্লামা শফী দা. বা.। এবয়সে তাকেই নারী, দেশ ও সমাজ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। তিনি প্রকৃতপক্ষে দেশের একজন অভিভাবক হয়েই সাহসী এ ভূমিকা নিলেন।

    এ দেশের পাঠ্যপুস্তকে যখন নাস্তিক্যবাদ ঢুকে গেল। দেশের অন্যতম নির্বাহী প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কোর্টের সামনে যখন গ্রীকদেবীর মূর্তী বসানো হল। তখন দেশের জনসাধারণের নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। এগুলো সরাসরি এ দেশের জনগনের সংস্কৃতি পরিপন্থী। এ দেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি পরিপন্থী।

    অথচ বর্তমানে দেশের জনসাধারণের টেক্সের টাকায় রাষ্ট্রের শিক্ষা খাত চলে। আর এ দেশের শিক্ষাটাও এ দেশের ছেলেমেয়েদের জন্য। তাহলে এরা কেন নিজের টাকার শিক্ষা নিজেদের ছেলেমেয়েদেরকে ভিনদেশী সংস্কৃতি মিশ্রিত শিক্ষা শিখাবে?

    আর আল্লামা শফী তো নিজের ছেলেমেয়েদেরকে জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত করেননি। বা নিজ সন্তানদের ঈমান আকিদা হারিয়ে যাওয়ারও ভয় নাই।

    এ পাঠ্যপুস্তক তো এ দেশের জনসাধারণের জন্যে। আলেম ওলামাদের সন্তানরা সাধারণত তাদের সন্তানদেরকে মাদরাসাগুলোতেই পড়ান। তো একজন বয়োবৃদ্ধ আল্লামা শফী গোটা জাতির হয়ে পাঠ্যপুস্তকের ব্যাপারে মাঠে নামলেন এবং কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নিয়েই ঘরে প্রবেশ করলেন।

    অনুরূপভাবে সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রীকদেবীর মূর্তির বিষয়টিও সরাসরি জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ত। ২০১৩ সালের পাইকারী মামলা বাদে আর কতজন আলেম মামলা মোকাদ্দমার শিকার? অনেক আলেম ওলামা তো হাইকোর্ট আর সুপ্রিম কোর্ট কোথায় এটাই জানেন না।

    এখানেও দেশের সকল নাগরিকদেরকে নিরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে দেখা যায়। কাউকে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। কাউকে একটা শব্দ পর্যন্ত করতে শোনা যায় নি।

    এখানেও কারা এগিয়ে আসলেন? আল্লামা শফী , আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ দেশের ওলামায়ে কেরাম, রাজপথে ঝাপিয়ে পড়লেন। অনেক আন্দোলন হল। অনেক হৈ চৈ হল। মিডিয়াগুলো সংবাদের পর সংবাদের পিছনে দৌড়াতে হল।এরপর একটা কাংখিত ফলাফল নিয়ে তিনি ঘরে প্রবেশ করলেন।

    হেফাজত এ পর্যন্ত যতগুলো আন্দোলন করল এর কয়টার সাথে আল্লামা শফী কিংবা ওলামায়ে কেরাম অথবা সরাসরি কওমী মাদরাসাগুলোর সার্থ জড়িয়ে আছে?

    আজকের যে কওমী সনদ এটাও এ সরকারের নিকট কেউ দাবী করেনি। সরকার মহোদয় ভালো বুঝেছেন বলে এ সনদ কওমী মাদরাসাগুলোকে দিয়েছেন। তাও সরকারের শর্তে নয় বরং কওমীর স্বকীয়তার শর্তে।

    এখানে কওমী সরকারের নিকট যায়নি বরং সরকার কওমীর নিকট সম্মান বজায় রেখে এসেছেন। এখানেও চিন্তার বিষয় রয়েছে।

    সরকারের নিকট যাওয়া আর সরকার আসা উভয়টার মাঝে পার্থক্য বুঝতে হবে।

    সুতরাং আল্লামা শফী এর বক্তব্য না বুঝে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তা প্রচার করা মিডিয়াগুলোর ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা ছাড়া কিছুই না। আর এ দেশের মানুষ মিডিয়াগুলোর ব্যাপারেও বেশ ভালো জানে। তারা কতটুকু দেশ বান্ধব, কতটুকু জনগণ বান্ধব তা সবাই জানে।

    এ দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় ভাগ্যের ব্যাপার হল, আল্লাহ তায়ালা আল্লামা শফী সহ অনেক বড় বড় সচেতন আলেম ওলামা এ দেশের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তাদের যথাযথ কদর করতে হবে। তাদেরকে যথাযথ সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে।

    সূত্র: ইনসাফ ২৪. কম

    Facebook Comments Box

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    আর্কাইভ

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮২৯৩০৩১  
  • ফেসবুকে আওয়ারকণ্ঠ২৪.কম