লেখক: হাবীব আনওয়ার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি | ০১ মে ২০২০ | ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ
দারুল উলূম দেওবন্দ ১’শ কোটি ফেরত দিতে পারলে আমরা ৮ কোটি কেন পারবো না। দীর্ঘ ১৫০ বছর ধরে দেওবন্দের উত্তরসূরী দাবি করে আজ মাত্র ৮ কোটি টাকার জন্য আকবিরদের নীতি আদর্শের উপর কালিমালোপন কোন ভাবেই উচিত না। বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কওমী মাদরাসাসমূহ কিছুটা সংকটময় সময় পার করছে। আর এমন সংকটময় সময়ে সরকার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছে এটা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে বলেছেন। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। তবে এই অনুদান নেওয়া কতটা উচিত তা শতবার ভেবে দেখা দরকার ।
সাধারণত রমজান মাসে কওমী মাদরাসা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যান্য বছরের মত এবারো বন্ধ৷ তবে করোনা ভাইরাসের কারণে মৌসুমি কালেকশনটা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতি ঈদ পর্যন্ত থাকবে এর কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারেনি। তাতেই এত হতাশ হওয়াটা অন্তত কওমী আলেমদের জন্য বেমানান।
আমাদের আকাবির হযরতদের জীবনীতে মাদরাসার জন্য তাদের ত্যাগ ও কুরবানির অশ্রুভেজা ইতিহাস চোখে পড়ে। হাটহাজারী মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা হাবিবুল্লাহ কুরাইশী রহ. বেতন না পাওয়াতে ক্ষেতের পাশে থাকা কচু শাক রান্না করে খেয়েছেন। মুফতী আজম ফয়জুল্লাহ রহ. চট্টগ্রাম শহরের ৩শ টাকা বেতনের চাকুরির অফার প্রত্যাখ্যান করে ৩ টাকা বেতনে হাটহাজারী মাদরাসায় থেকেছেন। বগুড়া জামিল মাদরাসার সাবেক পরিচালক মাওলানা ইউসুফ নিজামী রহ. উস্তাদদের বেতন পরিষদের জন্য নিজের বিবির গহনা, ঘরের জন্য খাবার চাল পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। বর্তমান মুহতামিম সাহেবগণ মাত্র ২০ হাজার টাকর জন্য নিজের স্বকীয়তা এভাবে বিসর্জন দিবেন? মাওলানা নিজামীরা বিবির গহনা বিক্রি করে একবারে দান করেছেন। আর আপনারা অন্তত, গহনা বিক্রি করে সেই টাকা মাদরাসায় কর্জে হাসানা দিন। আল্লাহ চাহেতো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মাসে মাসে মাদরাসার ফান্ড থেকে আপনার ঋণ পরিষদ করবেন। তবুও সরকারি অনুদান নিয়েন না। আপনি মাদরাসার মুহতামিম! দয়া করে একদু’টা মাস একটু নরমাল খাবর গ্রহণ করুন। আয়েশি জীবন-যাপন পরিত্যাগ করে শিক্ষকদের বেতন পরিষদ করুন। কারণ, এই শিক্ষকগণই মাদরাসার জন্য নিবেদিত প্রাণ। আল্লাহর ওয়াস্তে সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করুন। আকাবির হযরতদের আমানত কওমী মাদরাসাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান!