| ২১ নভেম্বর ২০১৮ | ৫:০২ পূর্বাহ্ণ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্স বা আইএনএফ চুক্তি থেকে আমেরিকা যদি একতরফাভাবে সরে যায় তাহলে দেশটির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হবে; কোনোমতেই তারা বিনা জবাবে পার পাবে না। গতকাল (সোমবার) উপকূলীয় শহর সোচিতে সরকারি এক বৈঠকে পুতিন এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, মস্কো আরেকটি অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জড়াতে চায় না কিন্তু আমেরিকার সিদ্ধান্ত বিনা জবাবে ছেড়ে দেয়া হবে না। আমেরিকার সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া তবে তারা একতরফা এমন চুক্তি বাতিল করতে পারে না। ওয়াশিংটনের উচিত- পূর্ণভাবে ওই চুক্তি বাস্তবায়ন করা।
আমেরিকা এ চুক্তি বাতিল করলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা তৈরি করতে পুতিন সরকারি ও সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
গত ২০ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ওয়াশিংটন আইএনএফ বাতিল করবে। স্নায়ুযুদ্ধ চলার সময় ১৯৮৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ও রুশ নেতা মিখাইল গর্বাচেভের মধ্যে এ চুক্তি সই হয়েছিল। চুক্তির আওতায় ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ হতে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাল্লার পরমাণুবাহী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি নিষিদ্ধ করা হয়। পরবর্তীতে দুই দেশ প্রায় ২,৭০০ মধ্যম পাল্লার পরমাণুবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে।
আমেরিকাকে নিয়ে পুতিনের উদ্বেগ
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্কে কোনো ধরনের পরিবর্তন হয়নি এবং হোয়াইট হাউজের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি আশাও করে না ক্রেমলিন। তিনি রোববার মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন পেসকভ। তিনি বলেন, পেন্সের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন পুতিন।
পেসকভ আরো জানান, সিঙ্গাপুর বৈঠকে মাইক পেন্স আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার কথিত হস্তক্ষেপের অভিযোগটি পুনর্ব্যক্ত করেন।
রাশিয়ার সীমান্তের দিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের আগ্রাসী তৎপরতা, বাল্টিক সাগর নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যকার সম্পর্কে তিক্ততা বিরাজ করছে। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ সে তিক্ততাকে আরো গভীর করেছে।
ডেমোক্র্যাট পার্টি অভিযোগ করছে, রাশিয়া ওই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিতিয়ে দিয়েছে; যদিও মস্কো বরাবরই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।