লেখক: এস এম শাহনূর | ২১ জানুয়ারি ২০২২ | ১:২৩ অপরাহ্ণ
কবি মোঃ আমিনুল ইসলাম, গম্ভীর মেজাজ, বুদ্ধিদীপ্ত ও মিতভাষী। আমার পছন্দের একজন সাহিত্য প্রেমিক। ভাল কবিতা লেখেন,সুন্দর গল্প লেখেন এবং একজন উচুমানের আলোচক ও সমালোচকও বটে।অনলাইন সাহিত্যে তাঁর সরব উপস্থিতি,অভিনব উপস্থাপন আমার খুব ভাল লাগে। নিজে একজন কবি,একজন লেখক হলেও নতুন নতুন কবি লেখক সৃষ্টিতে তিনি অকৃপণ। তিনি ১৯৭০ সালের ২১ জানুয়ারি নওগাঁ জেলার রাণীনগরে নানা বাড়িতে জন্ম লাভ করেন। আজ তাঁর শুভ জন্মদিন। জন্মদিনে শুভকামনা নিরন্তর।
বাবা মৃত আব্দুল মজিদ প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন, মা মৃত আবেদা বেগম গৃহিণী ছিলেন।
গ্রামের স্কুলেই লেখাপড়া শুরু। বাবা, বড় ভাই এবং চাচা শিক্ষক হবার কারনে অতি অল্প বয়সেই লেখাপড়া শুরু এবং বরাবর ভালো ফলাফল করায় এলাকায় বেশ সুনাম ছিল।
গ্রামের আবহে বড় হওয়ায় তাঁকে গাছপালা, নদী বেশ টানে। আর গ্রামের পরিবেশে বন্ধু বান্ধবদের সাথে বেশ মজার সময় অতিবাহিত করেছেন।
ছোট বেলা থেকেই তিনি সংস্কৃতিমনা, টুকটাক কবিতা লিখা ও গল্প লেখায় ঝোঁক থাকলেও মূলত একজন মনোযোগী পাঠক।
লোকালি কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি, পরবর্তীতে উচ্চমাধ্যমিকে নওগাঁ ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নকালে উদীচী শিল্পগোষ্ঠির সাথে জড়িত ছিলেন এবং বেশ কিছু নাটকেও অভিনয় করেন।
একই প্রতিষ্ঠানে বি এস সি অধ্যয়নরত অবস্থায় তৎকালীন বি টি এন্ড টি বোর্ড, বর্তমান বিটিসিএলে চাকুরী হয়ে যায়। সাথে সথে লেখালেখি বন্ধ হয়ে যায়। তবে সাহিত্য সাংস্কৃতির সাথে বরাবরই সখ্যতা ছিল।
কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় কিছু গল্প কলেজ বিচিত্রায় ছাপা হয়। তবে উদাসীনতার কারনে সেই সৃষ্টিগুলো কাছে রাখা সম্ভব হয়নি।
তবে ২০১৪ সাল থেকে গল্প, কবিতা,ছড়া ও কিছু গান লিখা শুরু করেন। তবে অনলাইন সাহিত্য গ্রুপের কল্যাণে সে মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তিনি প্রথমে বিশ্ব বাংলা সাহিত্য নিকেতন ও পরে স্বপ্ননীল সাহিত্যচর্চা পরিষদ সহ বেশ কিছু অনলাইন সাহিত্য গ্রুপের সাথে জড়িয়ে পরেন!
পাঁচ শতাধিক কবিতা লেখা হলেও কাব্য বা গল্প গ্রন্থের প্রকাশে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তবে ২০১৯ সালে একটি যৌথ কাব্যগ্রন্থে ২৮ টি কবিতা স্থান পায়। এর পর ১০-১২ টি সংকলিত কাব্যগ্রন্থে এবং তার বেশ কিছু কবিতা বাংলাদেশ ও ভারতের দৈনিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকায় স্থান পায়। ২০২১ সালে “জল ছোঁয়া মন” নামে প্রথম কাব্যগন্থ প্রকাশ পায়। চলতি ২০২২ সালের একুশে বই মেলায় ” ম্যাডাম” নামের উপন্যাস প্রকাশের অপেক্ষায়।
বর্তমানে তিনি অনলাইন সাহিত্য গ্রুপ স্বপ্ননীল সাহিত্যচর্চা পরিষদের সভাপতি, অনলাইন লিটারেচার গ্রুপ’স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক, জেইন টিভি নিউজ সহ বেশ কিছু সাহিত্য গ্রুপে উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জন্মদিনের অনুভূতি নিয়ে লেখা তাঁর একটি বিশেষ কবিতা ‘কালবেলা’ পাঠকের জন্য তুলে দিলাম।
মোটা ফ্রেম ক্ষয়িষ্ণু দৃষ্টি জীবন রেখা টানে,
দিনকাল ক্ষণ গেল সুর তাল লয়হীন গানে।
সুখ পাখি অধরা তবুও আশায় চলেছি ছুটে,
উপরে চোখ সুদিনের অংক কষে কুলি মুটে।
পঞ্চাশ বসন্ত পেরিয়ে চলেছি গোলাপ খুঁজে,
ঝাপসা দৃষ্টিতে স্বপন দোলে পাইনিতো বুঝে।
কখন ঝরে পাপড়িগুলো কখন যেন শুখায়,
গন্ধহীন ছন্দহীন সময়ে আমি অধম শুধায়।
পৃথিবীর সারা শরীর জুড়ে সুখ করছে খেলা,
ধরতে গেলেই দূরে সরে তাইতো কষ্টে বেলা।
আশার তরী বাঁচতে শেখালো সামনেই সুখ,
ভাঙবে মেলা ভাঙছে জেনেও বেঁধেছি বুক।
নিভুনিভু বাতির শলতে বলছে আমিই ভাতি,
অবিশ্বাসে ক্লান্ত হৃদয় খুঁজছে কোথায় ছাতি?
হাটিহাটি পা পা যখন শুনি রূপকথার চরিত্র,
বাঁচতে শিখাল যুবক মন তাই খুঁজছি অরিত্র।
শত অর্জন খাতায় শূন্য,কি যাবে তবে সাথে ?
লেনা দেনায় ভুল সদায় কিছু নেইকো হাতে।
মরতে চাই না সুন্দর ভবে মুমূর্ষু বিবেক সরোব,
যেতেই হবে টিকিট কোথা’ তাইতো কবি নীরব।
সহায় সম্পদ এখানেই রবে সঙ্গে পাপ পুণ্য,
দুনিয়াটা কালবেলা ফেরার রাস্তা বুঝি ভিন্ন !
জন্মদিনের হিসাব এসেছে বাকীর অংক মস্ত,
সুখ খুঁজে যাই বোকা পথিক সূর্য যাবে অস্ত।
লেখক: এস এম শাহনূর
কবি,মুক্তিযুদ্ধ,লোকজ সংস্কৃতি ও ইতিহাস গবেষক।