লেখক : কে.এম জসিম উদ্দিন, সভাপতি - নবীনগর থানা প্রেসক্লাব | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৮:৩৮ অপরাহ্ণ
সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে আলোচনা হবে এটা দোষের কিছু নয়,গণমাধ্যম মানেই জনতার আদালতে কখনো আলোচিত আবার কখনো সমালোচিত হবে এটা নিয়মতান্ত্রিক বিষয়।
অপসাংবাদিকতা,রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিরোধী প্রচার প্রচারণা অবশ্যই নিন্দনীয় এবং শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
সুস্থ গণমাধ্যম একটি জাতীর আয়না ও নির্ভরতার স্থান।
তবে তার জন্য জ্ঞান বিজ্ঞান,শিক্ষাদীক্ষা পারিভাষিক বিষয়ে সেন্স থাকার কোন বিকল্প নেই।
সেই সাথে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে আরো ভালো হয়।
প্রশ্ন উঠতে পারে যারা সাংবাদিকতার উপর অনার্স মাস্টার্স না থাকলে সে কোন ভাবেই সাংবাদিক হতে পারে না এমন পন্ডিতদের কাছে আমার কথার কোন মূল্য নাও থাকতে পারে।
বেশ কয়েকটি সাংবাদিকতার উপর স্বল্প মেয়াদি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করে বিজ্ঞ সাংবাদিকদের কাছ থেকে যেটুকু জানতে পেরেছি জার্নালিজম এর উপর উচ্চতর ডিগ্রী না থাকলে মফস্বল এলাকায় সাংবাদিক হওয়ার কিছু দিক নির্দেশনা,নিয়মনীতি আছে।
যেগুলো ক্রমান্বয়ে আপনাকে সাংবাদিক হওয়ার পথ তৈরি করে দেবে।
যাক এসব বিষয়ে আমি আলোচনা লম্বা করতে চাই না।
কি নিয়ে কার সাথে তর্ক করবো ?
খোদ পিআইবির মহাপরিচালককেও যখন দেখি ভুল তথ্য উপাত্ত দিয়ে বক্তব্য দেয় তখন সাধারণ মানুষের বলা বুঝা নিয়ে এতো হৈচৈ করে লাভ কি ?
সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয়ের নিকট কেন জানি জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আসলেই কি ৩০টি আইপি টিভি আছে নাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে নিয়ে কথা বললে দ্রুত গতিতে পৃথিবী জয় করতে পারবেন এমন ধারণা থেকে আপনার এই বলা ??
যারা আপনাকে এই তথ্য দিল তাদের অবস্থান নবীনগরে কোথায় আছে যেনে নেবেন।
আপনি যেই চেয়ারে বসে যেই উপজেলাকে নিয়ে এমন উদ্ভট তথ্য উপাত্ত দিয়ে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বক্তব্য প্রদান করলেন সেই উপজেলার সন্তান পিআইবির সাবেক মহাপরিচালক শাহ আলমগীর সাহেব বেঁচে থাকলে হয়তো ভীষণ কষ্ট পেতেন উত্তরসুরীর এই আচরণ দেখে।
অথচ দেশের প্রথমসারির একটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া নবীনগরকে নিয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছেন।
উনারাও আবার সাংবাদিকতার দিকপাল বনে যান।
আমি একজন মফস্বল সংবাদকর্মী হিসেবে নবীনগরের মতো একটা স্বনামধন্য উপজেলাকে নিয়ে এমন মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
হ্যা আমি স্বীকার করছি নবীনগরে বেশ কিছু ফেইসবুক পেইজ আছে যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট খাটো সংবাদ তুলে ধরেন যেগুলো জাতীয় বা আঞ্চলিক পত্রিকায় নিউজ আকারে ছাপানো হয় না বা প্রকাশ হয় না।
যদিও এগুলোর সরকারি কোনো বিধানে নেই।
এই পেইজগুলোর অনেকেই আছেন মূলধারার দৈনিক পত্রিকা বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত।
তারা কি সাংবাদিকতার নূন্যতম জ্ঞানও রাখেন না ?
তারা সবাই চাঁদাবাজি করে
এমন কি তথ্য তাদের কাছে আছে আমার জানা নেই!
যদিও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকতে পারে।
তারমধ্যে বেশ কিছু সফলতাও আছে স্থানীয় ভাবে।
সেই তথ্য উপাত্ত কি আপনাদের কাছে আছে ?
আমি জানি মিথ্যাচার করলেও আপনাদের কিছু হবে না কারণ আপনারা সরকারের আজ্ঞাবহ,আর আমরা বলির পাঠা!
এতে আমার নবীনগরেরও অনেক সাংবাদিক মহাখুশি হয়েছেন।
কারণ কি জানেন এই পেইজগুলো উনাদের বাড়া বাতে জল ঢেলে দেয়।
উনাদের খুশির মাত্রাটা আরো বেড়ে গেলো যখন হাইকোর্ট একটি রিটের শুনানি করে ৯২টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ছাড়া সবকিছু বন্ধে সরকারকে নির্দেশ দেন তখন।
মুহূর্তের মধ্যে কয়েকজন সাংবাদিক,অনলাইন এক্টিভিস্ট,রাজনৈতিক দলের কর্মীরা এই খবর ভাইরাল করে দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
উনারা ভাবছেন এখন থেকে সব শেষ হলো ?
আরে ভাই কি শেষ ??
নিউজ পোর্টাল হয়তো বন্ধ হয়ে গেল,আইপি টিভি হয়তো বন্ধ হয়ে গেল, ফেইসবুক পেইজগুলোও কি বন্ধ হয়ে যাবে ??
হাইকোর্টের নির্দেশ সরকার বাস্তবায়নের আগেই যদি রায় স্থগিত করার আদেশ জারি হয় তখন কি করবেন ??
আগে তো দেখুন কোথাকার জল কোথায় গড়ায়।
পরিস্থিতি যেদিকে যাবে যাক।
আমার তাতে টেনশনের কোন কারণ নেই।
কারণ আমি অপসাংবাদিকতা করিও না,তা সমর্থনও করব না।
আপনাদের কয়েকজনের হয়তো লাগতে পারে!
ওহ আচ্ছা বলেন তো আপনি কি চান
অপসাংবাদিকতা বন্ধ হোক নাকি অন্য কিছু ?
যেকেউ যেন মোবাইল নিয়ে সাংবাদিকতার নামে ধান্দাবাজি চাঁদাবাজি করতে না পারে এমন কোনো উপায় নিয়ে কথা বলুন।
আমার মনে হয় সেটাই যুগ উপযোগী সিদ্ধান্ত হবে।
কপি পেষ্ট,ঘরে বসে সাংবাদিকতা,শেয়ারিং সাংবাদিকতা,সিন্ডিকেট সাংবাদিকতা,অপকর্ম ডাকতে পাওয়ার সাংবাদিকতা বন্ধ হোক।
আমি এটার পক্ষে।
এরই মধ্যে মহামান্য হাইকোর্ট একটি রিটের শুনানি শেষে যেই নির্দেশনা দিয়েছেন আমি হাইকোর্ট এর রায় নিয়ে কিছু বলে রাষ্ট্রীয় মামলায় আসামি হতে চাই না।
শুধু এটুকুই বলতে চাই হাইকোর্ট মানুষের প্রয়োজনে, হাইকোর্টের প্রয়োজনে মানুষ না।
তবে এখানে আমার কিছু প্রশ্ন আছে ?
প্রথমতঃ
# দেশের অন্যান্য নিউজ পোর্টালগুলো কি সরকার বিরোধী সংবাদ প্রচার করেছেন ?
# তাদের কি কোন পত্র পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা নেই ??
# আর কি নতুন করে কোনো নিউজ পোর্টাল রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে না ???
# অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার আদৌলে বাকি নিউজ পোর্টাল গুলো সবাই কি অপসাংবাদিকতা করেন ????
# এইসব অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকরাই চাঁদাবাজি করেন,অন্য সবাই ফেরেস্তা ?????
দ্বিতীয়তঃ
# আগে থেকে কারা রাষ্ট্র বিরোধী সংবাদ প্রকাশ বা প্রচার করেন তাদের তালিকা করা হলো না কেন ?
# আমরা যারা মূলধারার মিডিয়ায় সম্পৃক্ত আছি তারা কি সব সংবাদ প্রকাশ করাতে সক্ষম হচ্ছি ??
# এতো দিন পর্যন্ত অনলাইনে একটা নীতিমালা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি কেন ???
# অনলাইন মিডিয়ার কল্যাণে সব ধরনের সংবাদ প্রকাশ করা সম্ভব,এটা কি একটি শ্রেণীর অসুবিধার কারণ ????
# কেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল রেজিস্ট্রেশন আবেদন বন্ধ রাখা হয়েছে ??????
মোটকথা–
আরো অনেক কিছু বলার ইচ্ছে ছিল, সময়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব আনলাম না।
আমার কাছে অপসাংবাদিকতা অপসাংবাদিকতাই!
এটা ফেইসবুকে হোক,প্রিন্ট মিডিয়া,ইলেকট্রনিক মিডিয়া কিংবা অনলাইন মিডিয়াই হোক।
আগে থেকে একটা শুদ্ধি অভিযান,একটা নীতিমালা বেশ প্রয়োজন ছিল।
এই খবরে যেই ভাবে নাচানাচি শুরু করছে কিছু মানুষ তারা এখনো জানেন না রিট করার জন্য যেমন আইনজীবী আছে,তেমনি রায় স্থগিত আদেশ চেয়ে আবেদন করার আইনজীবীও অভাব নেই।
নাচবেন তো ভালো কথা।
তবে সাংবাদিকতার গুণগত মান তৈরি করার জন্য নাচুন,এটা বন্ধ ঐটা চালু এই আনন্দে নাচলে বুঝা যায় এখানে অন্য স্বার্থ আছে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |